রাজধানীর আজগর আলী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বর্ষীয়ান অভিনেতা এটিএম শামসুজ্জামানকে দেখতে গিয়েছেন বাংলা চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় নায়িকা পপি। সে সময় তার শয্যা পাশে গিয়ে বর্ষীয়ান এ অভিনেতার স্বাস্থ্যের খোঁজ খবর নেন তিনি।
১৯ মে, সন্ধ্যার পরে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকে এক স্ট্যটাসের মাধ্যমে এ তথ্য জানিয়েছেন পপি।
ফেসবুকে পপি লিখেছেন, ‘এটি এম শামসুজ্জামান শুধু ভালো একজন অভিনেতা নন, তিনি একজন শিক্ষক, আমার গুরুজন, আমার বাবা। এ ছাড়াও আমার ভালোবাসার একজন প্রিয় মানুষ। তার হাসি আমার কাছে হাজার কোটি টাকার চেয়ে অনেক বেশি দামি। আমি অনেক লাকি তিনি বাবা হিসাবে সবসময় আমার পাশে থেকেছেন। আর আমার সকল প্রাপ্তি ও ভালো কাজে খুশি হয়েছেন এবং অনুপ্রেরণা দিয়েছেন। এজন্য আমি তার কাছে চিরকৃতজ্ঞ।’
‘তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছেন। আমরা তাকে এই অবস্থায় আর দেখতে চাই না, তিনি সুস্থ হয়ে আমাদের মাঝে ফিরে আসুন। সবাই আমার বাবার জন্য দোয়া করবেন আল্লাহ যেন তাকে তাড়াতাড়ি সুস্থ করে দেন। আমার বাবার পাশে থাকার জন্য ধন্যবাদ মমতাময়ী প্রধানমন্ত্রীকে। তিনি সবসময় শিল্পীদের ভালোবাসেন ও পাশে থাকেন। তার প্রতি অনেক ভালোবাসা ও কৃতজ্ঞতা।’
১৮ মে, শনিবার সকালে এটিএম শামসুজ্জামানের ছোট ভাই সালেহ জামান প্রিয়.কমকে জানিয়েছেন, চিকিৎসাধীন এ অভিনেতা এখন ভালো আছেন। স্বাভাবিক খাবার খেতে পারছেন। এতদিন তাকে নলের মাধ্যমে খাবার দেওয়া হচ্ছিল।
এদিকে ১৩ মে আনুষ্ঠানিকভাবে এটিএম শামসুজ্জামানের চিকিৎসার সব ধরনের দায়িত্ব নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই অভিনেতার চিকিৎসার জন্য প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে ১০ লাখ টাকার চেক হাসপাতালের তহবিলে জমা দেওয়া হয়েছে।

এটিএম শামসুজ্জামান দুই সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে রাজধানীর পুরান ঢাকার আজগর আলী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। খ্যাতিমান এ অভিনেতার শারীরিক অবস্থার উন্নতি হওয়ায় গত শনিবার তার লাইফ সাপোর্ট খুলে দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
৭৫ বছর বয়সী এটিএম শামসুজ্জামানের ফুসফুস এখনো খুবই দুর্বল। এখানে অধ্যাপক মতিউল ইসলাম তার চিকিৎসা তত্ত্বাবধান করছেন।
গত ২৬ এপ্রিল রাতে হঠাৎ করেই অসুস্থ বোধ করার সঙ্গে সঙ্গে এটিএম শামসুজ্জামানকে রাজধানীর আজগর আলী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর ২৭ এপ্রিল এই বরেণ্য অভিনেতার ফুসফুসে অস্ত্রোপচার করা হয়। তখন তাকে ৭২ ঘণ্টার পর্যবেক্ষণে কেবিনে রাখা হয়েছিল। তারপর তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে লাইফ সাপোর্ট দেওয়া হয়। পরে শারীরিক অবস্থার উন্নতি হলে তার লাইফ সাপোর্ট খুলে দেওয়া হয়। কিন্তু পরবর্তীতে তার ফুসফুসে সংক্রমণ দেখা দেওয়ার আশঙ্কা তৈরি হলে ৩০ এপ্রিল তাকে আবার লাইফ সাপোর্ট দেওয়া হয়।
এটিএম শামসুজ্জামানের স্ত্রী রুনি জামান জানান, ১৯৮২ সালে এটিএম শামসুজ্জামানের গলব্লাডারে অপারেশন হয়েছিল, তখন পুরোপুরি সফল হয়নি। সেখানেই এবার ইনফেকশন হয়েছে। যার কারণেই সমস্যাটা প্রকট হয়ে তিনি সম্প্রতি অসুস্থ হয়ে পড়েন।