25 C
Dhaka
মে ৩, ২০২৫
Bangla Online News Banglarmukh24.com
জাতীয় প্রশাসন

“পুলিশ এখন মানুষের প্রথম ভরসাস্থল”

আমরা যখন রাতে গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন,
পুলিশ তখন নির্ঘুম চোখে পাহারা দেয় দেশ,
আমরা যখন প্রিয়জনের পাশে বসে গল্প করি, পুলিশ তখন রাস্তায় দাঁড়িয়ে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে ব্যস্ত। কত কষ্টসহিষ্ণু তাদের জীবন। একজন পুলিশ সদস্যের জীবনে যেমন সাহসিকতার গল্প আছে, তেমনি বিড়ম্বনার গল্প আছে। যেমন মানবিকতার গল্প আছে, তেমনি রূঢ়তার গল্প আছে।
তাদের অমানুষিক পরিশ্রমের গল্পটি এ রকম—কখনো ৮ ঘণ্টা, কখনো ১২ ঘণ্টা, কখনো ১৬ আবার কখনো ১৮ ঘণ্টার ডিউটি করতে হয়। কোনো ধরাবাঁধা নিয়ম নেই। তাদের জীবনেও যেন কোনো উৎসব নেই। কোনো প্রাকৃতিক বিপর্যয় নেই। কখনো প্রচণ্ড গরমে ইউনিফর্ম পরে, ঘামে ভিজে, আবার কখনো বৃষ্টিতে ভিজে তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালনে ব্যস্ত থাকতে হয়।
রাস্তার অলিগলি থেকে বঙ্গভবন, গণভবন। মসজিদ, মন্দির, গির্জা, প্যাগোডা—কোথায় পাহারা দিতে হয় না তাদের? কোথায় নেই তারা?
হাসপাতালের অসুস্থ রোগী থেকে মৃত লাশের পাশে, কিংবা করোনায় আক্রান্ত মৃত লাশের সৎকারে। কৃষকের ধান কাটায়। আবার মাঠে-ময়দানে, পাড়া-মহল্লায়, হাটবাজার—সবখানে পুলিশ সদস্যরা। করোনার আতঙ্কে অজ্ঞাত লাশের পাশে যখন কেউ নেই, তখন পুলিশকে ওই লাশের পাশে দাঁড়াতে হয়। লাশের দাফনের সব ব্যবস্থা করতে হয়।
পার্থক্যটা এখানে, আমরা করোনা মোকাবিলায় ঘরে আর তারা বাইরে। আমরা প্রিয়জনের সান্নিধ্যে আর তারা জীবনের ঝুঁকিতে। তারা দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে আক্রান্ত হচ্ছে। আর আমরা অসচেতনতায় আক্রান্ত হচ্ছি। ইতিমধ্যে করোনা মোকাবিলায় দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে পুলিশের তিন সদস্যের মৃত্যু হয়েছে। আমরা যখন প্রিয়জনের লাশ ছুঁয়ে দেখতে পারি না, তখন অন্যের লাশ কাঁধে বহন করে পুলিশ। তাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ পালন করতে হয়। যেকোনো সময়, যেকোনো মুহূর্তে প্রয়োজনে ছুটে আসতে হয় ঘর থেকে। তাদেরও তো ঘরে অসুস্থ মা–বাবা থাকতে পারে। সন্তানসম্ভাবা স্ত্রী থাকতে পারে।
তারপরও আমরা পুলিশকে কারণে–অকারণে অপছন্দ করি। তাদেরকে নিয়ে নেতিবাচক সমালোচনা করি। তাদেরকে নিয়ে খারাপ ধারণা পোষণ করি। তারাও তো রক্তে–মাংসে গড়া মানুষ । তাদেরও আবেগ আছে, অনুভূতি আছে। মানুষের সম্মান পাওয়ার অধিকার আছে। আমরা যেন তাদের সঙ্গে খারাপ আচরণ না করি, বরং আমরা তাদের সাহসিকতার জন্য গর্ববোধ করতে পারি। মানুষের জানমাল ও সম্পদের নিরাপত্তা রক্ষার দায়িত্বে নিয়োজিত থাকা পুলিশ নামক এই সব মানুষকে ভালোবেসে বুকে জড়িয়ে ধরতে পারি।
আসুন আমরা রাস্তার প্রতিটি মোড়ে মোড়ে ইউনিফর্ম পরে দাঁড়িয়ে থাকা পুলিশকে সালাম দিই। তাদের ভালো কাজের প্রশংসা এবং মূল্যায়ন করি। এই দুর্যোগ মুহূর্তে মানুষের পাশে সাহসে বুক বেঁধে দাঁড়ানোর জন্য তাদের পুরস্কৃত করি। তাদেরকে উৎসাহিত করি।আর সব দোষ কেন পুলিশের ওপর? আর সব কাজেই কেন পুলিশকে করতে হয়? বলপ্রয়োগ করা থেকে শুরু করে চোর ধরা, সন্ত্রাস দমন, ভূমি বেদখল মুক্ত করা থেকে ভূমি দখল করে দেওয়া এবং সামাজিক সচেতনতার কাজও তাদের করতে হয়। তাহলে আমাদের কাজ কী? আমাদের নাগরিক হিসেবে দায়িত্ব এবং কর্তব্য কী? আমরা পুলিশকে বন্ধু ভাবতে পারি।

রাষ্ট্রের এই অতন্দ্র প্রহরী পুলিশকে যেকোনো সংকট, সংগ্রামে, দুর্যোগ আর সম্ভাবনায় আমরা সাথি করে পথ চলতে চাই। আসুন করোনা মোকাবিলায় সবাই একসঙ্গে যুদ্ধ করি। সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তুলি।
পুলিশদের রাষ্ট্রীয় সুযোগ–সুবিধা আরও বাড়াতে হবে। তাদের নিরপেক্ষ ও স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ দিতে হবে। মহান মুক্তিযুদ্ধ থেকে শুরু করে বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশ পুলিশের গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা আছে।
আসুন পুলিশকে ঘৃণার চোখ দিয়ে নয়, ভালোবাসা আর শ্রদ্ধার চোখ দিয়ে তাদের দিকে তাকাই। সবাই মিলে বদলে দিই সমাজ এবং দেশ।
আমরা যেন পুলিশকে শ্রদ্ধা করি, ভালোবাসি। পুলিশকে সাথে নিয়ে সবাই মিলে ক্ষুধা দুর্নীতি মুক্ত সোনার বাংলা গড়ে তুলি।

সম্পর্কিত পোস্ট

আইন-বিধি মেনে কাজের গতি বাড়ানোর তাগিদ

banglarmukh official

আছিয়া ধর্ষণ ও হত্যার বিচার ৭ দিনের মধ্যে শুরু হবে: আইন উপদেষ্টা

banglarmukh official

শুক্রবার কক্সবাজার যাচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা ও জাতিসংঘ মহাসচিব

banglarmukh official

শিশু আছিয়ার মৃত্যুতে প্রধান উপদেষ্টার শোক, দ্রুত বিচার নিশ্চিতের নির্দেশ

banglarmukh official

২০২৬ সালেই বাংলাদেশকে এলডিসি থেকে উত্তরণ করা হবে

banglarmukh official

জাতিসংঘ মহাসচিব ঢাকায়

banglarmukh official