কোভিড–১৯ রোগে আক্রান্ত এক রোগীকে অটোরিকশা ও অ্যাম্বুলেন্সে তুলে দিয়েছিলেন চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার নয় নম্বর পশ্চিম বেমশা ইউনিয়ন পরিষদের গ্রাম পুলিশসদস্য মো. মনির হোসেন।পরে ওই ব্যক্তি মারা যান। মৃত ওই ব্যক্তির লাশ দাফনেও অংশ নেন মনির। তাঁকে এসব কাজ করতে হয় কোনো সুরক্ষা পোশাক ছাড়াই। একপর্যায়ে করোনায় সংক্রমিত হন মনির।তবে চিকিৎসার পর বর্তমানে তিনি সুস্থ হয়ে বাড়িতে কোয়ারেন্টিনে আছেন। মনির হোসেন বলছিলেন, ‘সুরক্ষা পোশাক থাকলে হয়তো করোনায় সংক্রমিত হতাম না।’
গ্রাম–পুলিশ আইন সদস্যরা স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) অধীনে কাজ করেন। ইউপি চেয়ারম্যান তাঁদের বার্ষিক গোপনীয় অনুবেদনের (এসিআর) অনেবেদনকারী এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) প্রতিস্বাক্ষরকারী।
সাতকানিয়ার ইউএনও নূরে আলম প্রথম আলোকে বলেন, সরকারিভাবে গ্রাম পুলিশ সদস্যদের কোনো সুরক্ষা পোশাক দেওয়া হয়নি। করোনা আক্রান্ত এক প্রতিবেশীকে হাসপাতালে আনা-নেওয়ার সময় এক গ্রাম পুলিশ সদস্য করোনায় সংক্রমিত হয়েছিলেন বলে তিনি জেনেছেন।
দেশে করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকারি বিভিন্ন বাহিনীর সঙ্গে মাঠ পর্যায়ে কাজ করছে গ্রাম পুলিশও। গ্রাম পুলিশ সদস্যরা কোনো ধরনের সুরক্ষা পোশাক ছাড়াই এই কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। এমন কি করোনার উপসর্গ নিয়ে মারা যাওয়া ব্যক্তির লাশ বহন ও দাফন করতে হচ্ছে তাঁদের।
এমন পরিস্থিতির মধ্যে নিজেদের জীবন ও পরিবার নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন গ্রাম পুলিশ সদস্যরা। তাঁরা দ্রুত সারা দেশের সব গ্রাম পুলিশ সদস্যকে ব্যক্তিগত সুরক্ষা পোশাক (পিপিই) ও সরঞ্জাম দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। একই সঙ্গে সরকারের প্রণোদনাও চেয়েছেন।
সম্প্রতি করোনার উপসর্গ নিয়ে মারা যাওয়া এক ব্যক্তির লাশ দাফন করেছেন নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার ১৪ নম্বর হাজীপুর ইউনিয়ন পরিষদের গ্রাম পুলিশ সদস্য মো. ফারুক। তিনি বলেন, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কোনো ধরনের সুরক্ষা পোশাক ছাড়াই ৩ মে ওই ব্যক্তির লাশ তাঁদের দাফন করতে হয়েছে। গ্রাম পুলিশ সদস্য আনোয়ার, জামাল ও করিমকে নিয়ে তিনি লাশ দাফনে অংশ নেন। এ সময় থানা-পুলিশ সদস্যদের গায়ে সুরক্ষা পোশাক থাকলেও তাঁদের কোনো সুরক্ষা পোশাক ছিল না।