পৃথিবীতে সোনা এবং প্লাটিনাম এই দুই ধাতুকে অত্যন্ত মুল্যবান ধরা হয়। মূলত দুস্প্রাপ্যতার জন্যই এগুলোর মূল্য এতো বেশি। তবে মহাকাশে এই ধাতুগুলো অত্যন্ত মূল্যহীন। ব্ল্যাকহোলের প্রভাবে মহাকাশে প্রতিবছর ছড়িয়ে পড়ছে কোটি কোটি টন সোনা ও প্লাটিনাম। তৈরী হচ্ছে বিশালাকার পিন্ড। প্রতিবছর অন্তত এমন একটি পিণ্ড তৈরী হয়, যার ভার সূর্যের প্রায় ২০ গুন। সায়েন্সনিউজ, স্পেস ডট কম।
এই ধাতুগুলো আসছে কোথা থেকে, ছড়াচ্ছে কোনো আর পিণ্ডই বা কেনো তৈরী হচ্ছে, বিজ্ঞানীরা বহুদিন ধরে এই কারণগুলো অনুসন্ধান করছেন। অবশেষে কোথায় এই পিণ্ডগুলো তৈরি হচ্ছে তা জানা গেলো। কী ভাবে তা তৈরি হচ্ছে, তা-ও জানা গেল, এই প্রথম। গবেষণাগারে কম্পিউটার সিম্যুলেশনের মাধ্যমে। সাড়াজাগানো গবেষণাপত্রটি বেরিয়েছে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান-জার্নাল ‘নেচার’-এ। গবেষকদলে রয়েছেন দুই খ্যাতনামা জ্যোতির্বিজ্ঞানী কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান ও কলম্বিয়া অ্যাস্ট্রোফিজিক্স ল্যাবরেটরির অধ্যাপক ব্রায়ান মেৎঝার ও ড্যানিয়েল এম সিগেল। রয়েছেন আরও এক জন বিশিষ্ট জ্যোতির্বিজ্ঞানী জেনিফার বার্নস।
উত্তোলন শুরুর পর থেকে ২০১৯ সালের প্রথম ৬ মাস পর্যন্ত গোটা বিশ্বে ১ লক্ষ ৯০ হাজার ৪০ টন ওজনের সোনা খনি থেকে তোলা হয়েছে। ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিল বলছে, এই পরিমাণ সোনা আরো তুলতে হলে ভ‚পপৃষ্ঠের এতটা নীচে নামতে হবে যে ২০৫০ সালের পর খনি থেকে সোনা তুলে আনার কাজটা পৃথিবীতে হয়ে পড়বে খুবই ব্যয়সাপেক্ষ। আর ২০৭৫ সালের পর অবস্থাটা এমন হবে যে খনি থেকে সোনা উত্তোলনের চালু প্রযুক্তি আর কাজেই লাগবে না আমাদের গ্রহে। ওই প্রযুক্তি দিয়ে আর সোনা তোলা যাবে না।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের জিওলজিক্যাল সার্ভের তথ্য বলছে, ২০১১ সাল পর্যন্ত ১৯২ টন ওজনের প্ল্য্যাটিনাম উত্তোলন করা সম্ভব হয়েছে। এখন যে হারে তোলা হচ্ছে, তাতে আর একশো বছরেই পৃথিবীর সব প্ল্য্যাাটিনামের ভান্ডার শেষ হয়ে যাবে। পৃথিবীর সোনা ও প্ল্যাটিনামের সঞ্চয় বলতে তো এইটুকুই। আর মহাকাশে প্রতিবছরই সোনা ও প্ল্যাটিনামের এতো বড় পিণ্ড তৈরি হচ্ছে যার ওজন সূর্যের ২০ গুণ!