নদীপথে লঞ্চ ভ্রমণের আনন্দ একটু আলাদা। বিশেষ করে দক্ষিণ অঞ্চলের মানুষ লঞ্চ ছাড়া যাতায়াত করতে তেমন আগ্রহ দেখান না। তবে নিম্ন আয়ের মানুষগুলো স্বল্প খরচে জীবনের তাগিদে কর্মের সন্ধানে সর্বদাই নৌ-পথে যাতায়াত করে থাকেন। কিন্তু বিশেষ কোনো ছুটি আসলেই এসব মানুষকে পড়তে হয় চরম ভোগান্তিতে। সেই সঙ্গে গুণতে হয় নির্দিষ্ট ভাড়ার চেয়ে দ্বিগুণ টাকা।
সরজমিন ঘুরে দেখা যায়, আমতলী-তালতলী রুটের লঞ্চ কর্তৃপক্ষ যাত্রীদের জন্য রীতিমতো চাদর বিছিয়ে রেখেছেন। কোথায়ও তেমন কোনো জায়গা খালি পাওয়া যায়নি। তবে অনেক সাধারণ মানুষ না বুঝেই বিশেষ সেবা মনে করে বসে পড়েন বিছানো চাদরে। আর বসছেন তো ফাঁসছেন, দুই থেকে তিন শত টাকার জালে। মাঝেমধ্যে যাত্রীদের সঙ্গে না মীমাংসা হলে হতে হয় লাঞ্ছিত এমন কি অনেক সময় লঞ্চ কর্তৃপক্ষ নিরীহ যাত্রীদের গায়ে হাত পর্যন্ত তোলেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
লঞ্চে মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষগুলো পড়েন কেবিন বাণিজ্যের কবলে। কেবিন থাকলে তারা কেবিন বুকিং দিতে গেলে কর্তৃপক্ষ দাবি করেন সব বুকিং হয়ে গেছে। কিন্তু নির্দিষ্ট ভাড়ার চেয়ে একটু বেশি টাকা দিলেই মিলে যায় কেবিন!
তাছাড়া আমতলী ও তালতলী এই দুই উপজেলার মানুষের নৌ-পথে যাতায়াত করার একমাত্র মাধ্যমই আমতলী লঞ্চ ঘাঠ। কিন্তু এত জনবহুল দুই উপজেলার মানুষের কথা না ভেবে স্বার্থলোভী লঞ্চ মালিকরা ত্রুটি ও ফিটনেস বিহীন ছোট লঞ্চ দিয়েই সেবা দেয়। এতে সর্বদা জীবনের ঝুঁকিতে থাকতে হয় এসব মানুষকে। অনেক সময় বৈরি আবহাওয়ার সময় যাত্রাগামী মানুষ ভেবে থাকে এটাই তাদের জীবনের শেষ দিন।
একাধিকবার সচেতন মহল ও সেবামূলক অনেক সংগঠন বড় লঞ্চের দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করলেও তা কোনো কাজে আসেনি। এমন কি পরিবর্তন হয়নি সেবার মানও।
এ বিষয়ে বিআইডব্লিউটি কতৃপক্ষের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও কোনো সাক্ষাৎ পাওয়া যায়নি।
আমতলী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবুল বাশার বলেন, সরকারের নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে অতিরিক্ত অর্থ নেওয়া বেআইনি। আমরা বিশেষ ছুটিতে লঞ্চ টার্মিনালে তদারকি করি আর অনিয়ম কিছু পেলে আইনের আওতায় নিয়ে আসি। ভবিষ্যতে এমনটা বহাল থাকবে।