26 C
Dhaka
জুলাই ৭, ২০২৫
Bangla Online News Banglarmukh24.com
অপরাধ

ইয়াবা গডফাদার সাইফুল: নাফ নদীতে শুরু, নাফ নদীতেই শেষ

বাংলাদেশের পুলিশ বলছে, সে দেশে মাদক ইয়াবা সাম্রাজ্যের অন্যতম গডফাদার সাইফুল করিম কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছেন।

তিনি প্রায় নয় মাস সময় বিদেশে পালিয়েছিলেন। কিন্তু সম্প্রতি দেশে ফেরার পর পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে।

এরপরই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ একাধিক গোয়েন্দা সংস্থার শীর্ষ তালিকায় থাকা আসামী মি. ইসলাম নিহত হন।

বৃহস্পতিবার গভীর রাতে টেকনাফ স্থলবন্দরের সীমানা প্রাচীরের শেষ প্রান্তে এই ঘটনা ঘটে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

তার মৃত্যু হয় যে জায়গাটিতে সেটি নাফ নদীর পারে। একসময় এই নদী থেকেই শুরু হয়েছিল সাইফুল ইসলামের অপরাধ জীবন।

গডফাদার জীবনের সূচনা যেভাবে

কক্সবাজারের সাংবাদিক তোফায়েল আহমেদ জানাচ্ছেন, ১৯৯৫ সালে টেকনাফ স্থলবন্দর চালু হওয়ার পর সাইফুল করিম ঐ বন্দরে আমদানি-রপ্তানির ব্যবসা শুরু করেন।

ব্যবসায়িক সাফল্যের হাত ধরে তিনি একাধিকবার সেরা করদাতা বা সিআইপি’র পুরষ্কারও পান।

পুলিশ কর্মকর্তাদের উদ্ধৃত করে তোফায়েল আহমেদ জানান, ১৯৯৭ সালে নাফ নদী দিয়ে বাংলাদেশে প্রথম ইয়াবার চালান ঢোকে।

সেই চালানটি সাইফুল করিম আনেন বলে পুলিশ কর্মকর্তারা তাকে জানিয়েছেন।

এরপর থেকে তার তৈরি ইয়াবা নেটওয়ার্কটি নাটকীয়ভাবে বাড়তে থাকে।

তিনি বনে যান ইয়াবা সাম্রাজ্যের দুই অধিপতিদের একজন।

অন্য ইয়াবা গডফাদার হলেন টেকনাফের বিতর্কিত সাবেক এমপি আব্দুর রহমান বদী, তোফায়েল আহমেদ জানান।

“এই ইয়াবা সাম্রাজ্য গড়ে তোলার কাজে সাইফুল করিমকে সহায়তা দেন তার মামা আব্দুর রহিম যিনি মিয়ানমারের বাসিন্দা,” বলছেন তিনি, “সীমান্তের ওপারে যে ৩৭টি ইয়াবা কারখানা রয়েছে আব্দুর রহিম সেগুলোর প্রধান ডিলার।” এসব তথ্য মি: আহমেদ জেনেছেন পুলিশ সূত্রে।

র‍্যাবের হাতে আটক ইয়াবা ব্যবসায়ীরা।

“মামা ইয়াবা উৎপাদনের দিকটি দেখতো আর ভাগ্নে সেগুলো তার নেটওয়ার্কের মাধ্যমে সারা দেশে ছড়িয়ে দিতো,” পুলিশকে উদ্ধৃত করে জানান তোফায়েল আহমেদ।

টেকনাফ মডেল থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাস বিবিসিকে জানান, সাইফুল করিম বৃহস্পতিবার বিদেশ থেকে ফিরে আসার পর পুলিশ তাকে আটক করে।

জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে মিয়ানমার থেকে আনা ইয়াবার একটি বড় চালান নাফ নদীর পারে মজুত রয়েছে।

এই তথ্যের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার গভীর রাতে সাইফুল করিমকে সাথে নিয়ে ঘটনাস্থলে গেলে, পুলিশের ভাষ্য অনুযায়ী, অস্ত্রধারী ইয়াবা ব্যবসায়ীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছোঁড়ে।

এতে সাইফুল করিম গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন।

এসময় পুলিশের ক’জন সদস্যও আহত হন বলে জানান মি. দাস।

গত ১৬ই ফেব্রুয়ারি টেকনাফে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের উপস্থিতিতে যে ১০২ জন ইয়াবা ব্যবসায়ী আত্মসমর্পণ করেন, সাইফুল করিম তাতে যোগ দেননি।

গত বছর মে মাসে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের তৈরি ৭৩ জন শীর্ষ ইয়াবা চোরাকারবারি ও ব্যবসায়ীর তালিকায় সাইফুল করিমের নাম ছিল দ্বিতীয়।

তালিকার শীর্ষে রয়েছে আবদুর রহমান বদির নাম।

বাংলাদেশে ইয়াবার বিস্তার।
একটি মৃত্যু ও কিছু প্রশ্ন

সাইফুল করিমের মৃত্যুর পটভূমি নিয়ে কিছু প্রশ্ন তৈরি হয়েছে।

টেকনাফ পুলিশ দাবি করছে, বৃহস্পতিবার অর্থাৎ ৩০শে মে’র রাতে তাকে গ্রেফতার করা হয় এবং সেই রাতেই তিনি নিহত হন।

কিন্তু বিবিসি বাংলার তরফ থেকে সাইফুল করিমের পরিবারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা জানান, আসন্ন একটি আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে তাকে যোগ দিতে দেয়া হবে বলে স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিদের আশ্বাসের পর তিনি দেশে ফিরতে রাজি হন।

তারা বলছেন, বৃহস্পতিবার ৩০শে মে নয়, ২৭শে মে’র রাতে এক ফ্লাইটে মি. করিম ঢাকায় আসেন।

তার পরিবারের কিছু সদস্য এবং ক’জন পুলিশ কর্মকর্তা এ সময় বিমানবন্দরে উপস্থিত ছিলেন।

তারা বলছেন, ঢাকায় পৌঁছানোর পর একটি সেফ-হাউজে সরিয়ে নেয়া হবে বলে তাকে অপেক্ষমাণ গাড়িতে তোলা হয়।

তারপর থেকে তার সাথে পরিবারের কোন যোগাযোগ ছিল না।

এরকম একজন তালিকাভুক্ত গুরুত্বপূর্ণ আসামীকে নিয়ে পুলিশ কেন রাতের বেলায় অভিযানে বের হলো, বিবিসির এই প্রশ্নের জবাবে টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাস বলেন, জিজ্ঞাসাবাদের সূত্র ধরে আসামীকে নিয়ে ইয়াবার চালান আটক করার জন্যই তারা ঐ অভিযানটি চালান।

আইন মেনেই এই কাজ করা হয়েছে বলে তিনি জানান।

সম্পর্কিত পোস্ট

বগুড়ায় স্কুলছাত্রকে শ্বাসরোধ করে হত্যা

banglarmukh official

যে কারণে স্বামীকে ৯ টুকরো করে সেফটিক ট্যাংকে ফেলেন স্ত্রী

banglarmukh official

এক মাসে ৩৫৪ নারী-শিশু নির্যাতন, ধর্ষণের শিকার ৭৭ জন

banglarmukh official

বরিশালে টাকা পাওয়ার অজুহাতে গৃহবধূকে ডেকে নিয়ে ধর্ষণ

banglarmukh official

পিরোজপুরে স্বামীকে হত্যা করে পালালেন স্ত্রী

banglarmukh official

চরফ্যাশনে ধর্ষণ করে ভিডিও ধারণ আসামী গ্রেফতার

banglarmukh official