করোনার করাল থাবায় পড়েছে ঝালকাঠি ও পিরোজপুরের সীমান্তবর্তী শতবর্ষী আটঘরের নৌকার হাট। জল আর স্থলের মাইল খানেক জায়গা জুড়ে নৌকার সমারোহ হাটে। প্রায় তিন মাস পর হাট বসলেও নেই ক্রেতা। ফলে নৌকার কারিগর, ফড়িয়া আর ইজারাদারসহ দুই জেলার ৫ হাজার পরিবার পড়েছেন চরম বিপাকে। তবে ঝালকাঠি জেলা প্রশাসক জানিয়েছেন নৌকা শিল্পের ক্ষতিগ্রস্ত কারিগরদের সহায়তা করা হবে।
পিরোজপুর জেলার নেছারাবাদ উপজেলার কুড়িয়ানা ইউনিয়নের আটঘর গ্রামে শতবছর ধরে নৌকার হাট বসছে। ঝালকাঠি জেলার একেবারে সীমান্তে অবস্থিত এ হাটটি। জৈষ্ঠ্য মাসে শুরু হয়ে নৌকার হাট চলে ভাদ্র মাস পর্যন্ত। প্রতি সপ্তাহে শুক্রবার আটঘরের হাট বসে। পিরোজপুর জেলার নেছারাবাদ, কাউখালি এবং নাজিরপুর উপজেলা ছাড়াও ঝালকাঠি সদর উপজেলার গাভারমচন্দ্রপুর, কীর্তিপাশা আর বাউকাঠি ইউনিয়নের দশ গ্রামের অন্তত ৫ হাজার পরিবার বংশ পরমপরায় নৌকা তৈরি ও বেচাকেনার সাথে জড়িত।
এবার করোনার মহামারিতে প্রায় তিন মাস হাট বন্ধ থাকার পর গত তিন সপ্তাহ ধরে হাট বসছে। জল আর স্থলে শতশত নৌকার পসরা নিয়ে বসছেন কারিগর ও বেচাবিক্রির সাথে জড়িত মানুষেরা। কিন্তু ক্রেতা নেই। হাতেগোনা আশপাশের কিছু লোক আসছেন। এ অবস্থায় করোনার থাবায় চরম লোকসানের শঙ্কায় সংশ্লিষ্টরা।
একজন ব্যবসায়ী বলেন, প্রতিবছর যে কেনাবেচা হতো আমরা লাভবান ছিলাম, এবার করোনার কারণে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হলাম।
স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রাচীন এ হাটে নেই কোন যাত্রী ছাউনি, ওয়াশরুম।
একজন ব্যবসায়ী বলেন, খাজনার পরিমাণ বাড়লেও ব্যবসায়ীদের কোন সুবিধা দেয়া হয় নাই।
পেয়ারা বাগান ও নৌকার হাট দেখতে প্রতি বছরই এখানে অনেক ভ্রমণকারী আসলেও এবার কেউ নেই।
অবশ্য ঝালকাঠি জেলা প্রশাসক ক্ষতিগ্রস্ত নৌকার কারিগরদের সহযোগিতার আশ্বাস দেন হবে।
জেলা প্রশাসক মো. জোহর আলী বলেন, তাদের যদি কোন সহযোগিতা লাগে তাহলে আমরা তা করতে পারব। তাদের ব্যবসা তারা চালিয়ে যেতে পারে এবং কোন সমস্যা না হয়।
আটঘরের প্রতি হাটে গড়ে দুলাখ টাকার দেড় থেকে দুই হাজার নৌকা বিক্রি হয়। তবে এখন হচ্ছে মাত্র ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকার।