বানারীপাড়ায় ইয়াতিম শিশু নেই,তবু ইয়াতিম খানা। সরকারী ক্যাপিটেশন গ্রান্ডের বরাদ্দও হচ্ছে সেখানে। দীর্ঘ ৮ বছর ধরে উপজেলার সলিয়াবাপুর ইউনিয়নের বাসার গ্রামে মোহাম্মদিয়া হাফিজিয়া ইয়াতিমখানায় ইয়াতিম শিশু না খাকলেও ১৬ জন ইয়াতিম শিশু দেখিয়ে সরকারী বরাদ্দের টাকা আত্মসাতের এমন চাঞ্চল্যকর অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযোগ রয়েছে বাসার গ্রামে মোহাম্মদিয়া হাফিজিয়া ইয়াতিমখানা ও মাদ্রাসার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন ১৬ জন ইয়াতিম শিশুর নাম করে সরকারী বরাদ্দের ১৬ হাজার টাকা (জনপতি ১ হাজার টাকা)উত্তোলণ করে আত্মসাৎ করে থাকেন। মা-বাবা থাকলেও মাদ্রাসার ছাত্রদের ইয়াতিম বলে চালিয়ে দিয়ে সরকারী বরাদ্দের এ টাকা আত্মসাৎ করা হয়।
অভিযোগের সত্যতা জানতে সরেজমিন গিয়ে ইয়াতিম খানার সাইনবোর্ড সাঁটানো দেখতে পেলেও সেখানে ১৬ জন ইয়াতিম শিশুর অস্তিত্বÍ খুঁজে পাওয়া যায়নি। কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন ১৬ জন ইয়াতিম শিশুর তালিকা ও প্রতিজনের নামে আলাদা রেজিষ্টার দেখাতেও ব্যর্থ হন। নিয়ম অনুযায়ী যাদের মা-বাবা কিংবা শুধু বাবা নেই তারা এ বরাদ্দ পাওয়ার কথা থাকলেও পরিচালনা কমিটির যুগ্ম সম্পাদক জাহাঙ্গীর হোসেন গং এ নিয়ম না মেনে সরকারী বরাদ্দের ক্যাপিটেশন গ্রান্ডের টাকা আত্মসাৎ করে চলছেন বছরের পর বছর ধরে।
বিভিন্ন সময় এনিয়ে অভিযোগ উঠলেও সমাজসেবা দপ্তর থেকে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। এ ইয়াতিম খানাটির সমাজসেবা অধিদপ্তরের ক্যাপিটেশন গ্রান্ড রেজি নং বরি ৫২৯/৯৮। প্রসঙ্গত ওই ইয়াতিম খানায় অডিটের সময় পূর্বেই তথ্য পেয়ে যায় ইয়াতিম খানা ও মাদ্রাসা পরিচালনা কর্তৃপক্ষ। অডিটের আগাম খবর পেয়ে তখন মাদ্রাসা ও বিভিন্ন এলাকা থেকে ছাত্র এনে তাদের ইয়াতিম হিসেবে দেখানো হয়। ফলে প্রকৃত সত্যতা আড়ালেই থেকে যায়।
এদিকে মোহাম্মদিয়া হাফিজিয়া ইয়াতিম খানা ও মাদ্রাসার মতো উপজেলার বিভিন্ন এলাকার আরও কয়েকটি ইয়াতিম খানার বিরুদ্ধে একই অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্থানীয় সচেতনমহল ইয়াতিম শিশুদের নামে যারা সরকারী বরাদ্দের অর্থ আত্মসাত ও দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী জানিয়েছেন। মোহাম্মদিয়া হাফিজিয়া ইয়াতিম খানা ও মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির যুগ্ম সম্পাদক মো. জাহাঙ্গীর তার বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।এ প্রসঙ্গে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা শাহাজাদী আক্তার সুমনা জানান অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত পূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।