বরিশাল নগরীর ডিসি (জেলা প্রশাসক) লেক’র তীরে গেলেই পাওয়া যাচ্ছে বড় বড় রুই, কাতল ও সিলভারসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ। গত দুই দিন ধরে পথচারী ও স্থানীয়রা ডিসি লেকের পানিতে অর্ধমৃত অবস্থায় ভেসে উঠা এসব মাছ ধরে নিচ্ছে। রক্ষনাবেক্ষণের অভাবে লেকের পানি নষ্ট হয়ে বিষক্রিয়ার সৃষ্টি হওয়ার কারনেই মাছগুলো মরে যাচ্ছে। সেই সাথে পানি ও পচা মাছের দুর্গন্ধে লেক ও পাশর্^বর্তী বঙ্গবন্ধু উদ্যানে মানুষের পথচলা এখন কষ্টদায়ন হয়ে দাড়িয়েছে।
সরেজমিনে দেখাগেছে, বিভাগ ও জেলা প্রশাসন এবং বিচার বিভাগের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বাসভবন এলাকা রাজাবাহাদুর সড়ক ও বঙ্গবন্ধু উদ্যানের মাঝে অবস্থিত এ লেকটি। লেকের পশ্চিম তীরে জেলা প্রশাসক’র বাসভবনের সামনে একটি সুদৃশ্য ঘাটলাও রয়েছে। জেলা প্রশাসকের মালিকানাধীন ও তত্ত্বাবধানে থাকায় এ লেকটি ডিসি লেক হিসেবে পরিচিত।
দৃষ্টিনন্দন এই ডিসি লেকের পাশে শতবর্ষি রেইন্ট্রি তলে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত দর্শনার্থীদের ভির থাকে। লেকের দু’পাশ ধরে জমে ওঠে গল্প-গুজব আর আড্ডা। কিন্তু গত দু’মাস ধরে পানি পচে দুর্গন্ধের কারনে লেকের পাশ দিয়ে হাটাও এখন দুস্কর হয়ে দাড়িয়েছে। তার মধ্যে গত দু’দিন ধরে লেকে চাষ করা বিশাল সাইজের মাছগুলো মরে ভেসে উঠছে।
বরিশাল জেলার নাজির হাবিবুর রহমান জানান, লেকের পানি নষ্ট হয়েছে মাস দুই আগেই। তবে এর কোন সঠিক কারন আমাদের জানা নেই। গত দেড় মাস পুর্বে মৎস্য বিভাগের পরামর্শে পানি শোধনের জন্য ১০ মন চুনা ফেলা হয়েছিল। এতেও পানি শোধন না হয়ে তা আরো বিষাক্ত হয়ে গেছে। ফলে পানি থেকে দুর্গন্ধ ও মাছ মরে ভেসে উঠছে। এর মধ্যে কয়েক হাজার টাকার মাছ ভেসে উঠলে তা স্থানীয়রা ধরে নিয়ে যায় বলে জানিয়েছেন তিনি।
বরিশাল জেলা মৎস্য কর্মকর্তা (হিলসা) বিমল চন্দ্র দাস বলেন, আমি নিজেই পুকুরের পানি পরিক্ষা করেছি। অতিরিক্ত গরম ও বৃষ্টির পরিমান কম হওয়াতে পানি নষ্ট হয়ে মাছ মারা যাচ্ছে। তবে পানি শোধনের জন্য রোববার ১০ হাজার টাকা মূল্যের ২শ কেজি জিওলাইক নামক ওষুধ দিয়েছি। এটি পানির সাথে মিশে গেলে মাছ মরা বন্ধ হবে। তবে বৃষ্টি না হলে ওই ওষুধ কাজে কাজবে বলে মনে হচ্ছে না। তাই লেকে পাম্পের মাধ্যমে নতুন পানি দেয়া জরুরী বলে জানান তিনি।
এ বিষয়ে পরিবেশ অধিদপ্তর বরিশাল বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আরেফিন বাদল বলেন, ডিসি লেকের পানি নষ্ট হওয়ার বিষয়ে আমাদের জানা নেই। তাছাড়া এ বিষয়ে জেলা প্রশাসন থেকে আমাদের অবহিতও করা হয়নি। আজ আমাদের একটি টিম ওই স্থানে পাঠিয়ে পানি নষ্ট হওয়ার বিষয়টি পরীক্ষা করে দেখবেন বলে তিনি জানিয়েছেন।