27 C
Dhaka
জুলাই ৭, ২০২৫
Bangla Online News Banglarmukh24.com
অপরাধ জেলার সংবাদ বরিশাল

সময়মতো এসে বেতন নিয়ে যান পিরোজপুর হাসপাতালের তিন ডাক্তার!

অনলাইন ডেস্ক:

হাসপাতালে উপস্থিত না থাকলেও সময়মতো এসে বেতন নিয়ে যান পিরোজপুর জেলা হাসপাতালের তিন ডাক্তার। কয়েকদিন হাসপাতালে গিয়ে এবং বেতন খাতা ঘেটে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, জেলা হাসপাতালের গাইনী বিভাগে (ইনডোরে) ডাক্তারের অভাবে সেবা কার্যক্রম বন্ধ। অথচ হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, গাইনী বিভাগে ফারহানা কবীর নামে একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার রয়েছেন। তিনি নিয়মিত বেতন-ভাতাও তুলছেন। অথচ বেশ কিছুদিন ধরে হাসপাতালে অনুপস্থিত তিনি। এ বিষয়ে জানতে ডা. ফারহানা কবীরকে ফোন দিলে তিনি জানান, ঢাকায় প্রশিক্ষণে ব্যস্ত আছেন তিনি। পরে ফোনটি কেটে দেন।

হাসপাতালটির আয়ুর্বেদী ডাক্তার হিসেবে দায়িত্বরত রয়েছেন দিপক কুমার হালদার। গত সোমবার বেলা ১১টায় তার কক্ষের সামনে গিয়ে দেখা যায় রোগীদের দীর্ঘ লাইন। কিন্তু ডাক্তারের খবর নেই। জানা যায়, তিনি সাড়ে দশটার দিকে এসে হাজিরা দিয়ে যান একবার। এরপর তার ব্যাক্তিগত মঞ্জুরী মেডিকেল হলে গিয়ে রোগী দেখেন। মন চাইলে ফেরার পথে আরেকবার ঢুঁ মারেন হাসপাতালে।

হাসপাতালটিতে সিজারিয়ান সেকশনে অপারেশন করার জন্য গাইনী বিশেষজ্ঞ থাকলেও সার্জারী ডাক্তার নেই। তাছাড়া অবচেতনবিদ (অ্যানেস্থেশিয়া), হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ, নাক, কান, গলা রোগ বিশেষজ্ঞ …বাস্তবে হাসপাতালে উপস্থিত থাকেন না।

এ ব্যাপরে পিরোজপুর জেলা হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. ননী গোপাল বলেন, সিজারিয়ান বিভাগের চিকিৎসক এখন ঢাকায় প্রশিক্ষণরত রয়েছেন। তবে বাকি দুজনের বিষয়টি এড়িয়ে যান তিনি।

চিকিৎসকের অনুপস্থিতির বাইরেও বেশ কিছু সমস্যা নিয়ে চলছে জেলা হাসপাতাল।

জানা যায়, হাসপাতালটির ডিজিটাল এক্স-রে মেশিন থাকলেও কোনো এক্স-রে হয় না। আর প্যাথলজি বিভাগে কিছু কিছু পরীক্ষা নিরীক্ষা করা হলেও অন্য সব জটিল পরীক্ষা বাইরে থেকেই করতে হয় রোগীদের। আল্ট্রসনোগ্রাম মেশিন থাকলে হাসপাতালে তা ব্যবহার করা হয় না ।

এ বিষয়ে পিরোজপুর জেলা সিভিল সার্জন ডা. মো. ফারুক আলমের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, এক্স-রে বিভাগে পুরাতনটা দিয়ে কাজ চলছে, ডিজিটালটা উদ্বোধনের অপেক্ষায়। তিনজন ডাক্তার অনুপস্থিত থেকে বেতন নেয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ অসুস্থ আছেন, আর দুইজন হাসপাতালে আসেন। সিজারিয়ানের বিষয় বলেন, অফিস চলাকালিন সময় সিজার করা হয়।

ভিন্ন চিত্র ফুটে উঠেছে নার্স-আয়াদের ক্ষেত্রে। জেলা হাসপাতালে শিক্ষানবীস মিলিয়ে অন্তত ৬০/৬৩ জন নার্স রয়েছেন। এসব নার্সরা বিভিন্ন চিকিৎসা কন্দ্রে পোস্টিং থাকলেও তারা (প্রেষণে) এ হাসপাতালে রয়েছেন।

মাত্র এক সপ্তাহ আগেও সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে হাসপাতালের সামনের সড়কটি দখল করে বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের প্রায় ২৫/৩০টি মোটর সাইকেল সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে আছে। এসব ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের বেশ ক’জন হাসপাতালের প্রবেশ পথে দাঁড়িয়ে অপেক্ষামান থাকে। আর ১৫/২০ জন ভেতরে বিভিন্ন ডাক্তারদের চেম্বারে ঢুকে বসে কথাবার্তা বলছেন। অফিস চলাকালীন সময়ে হাসপাতালের একাধিক চিকিৎসকদের রুমে ওষুধ কোম্পানি, ডায়াগনষ্টিক সেন্টারের প্রতিনিধিদের রোগীদের চেয়ার দখল করে বসে থাকতে দেখা গেছে। এসময় ডাক্তাররা রোগীদের চিকিৎসা সেবা দেয়ার চাইতে ওইসব প্রতিনিধিদের বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকেন বলে একাধিক রোগীর অভিযোগ। তবে হঠাৎ ক’দিন ধরে জেলা হাসপাতালে সকালের দিকে ওষুধ কোম্পানি প্রতিনিধিদের উপস্থিতি কম দেখা গেলেও কর্তৃপক্ষের অব্যবস্থাপনা রয়েই গেছে।

আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. ননী গোপাল বলেন, ওষুধ কোম্পানি প্রতিনিধিদের ভিড় একসময় ছিল, এখন নেই। বাকি সব সমস্যা সমাধানেও উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে।

সম্পর্কিত পোস্ট

বরিশালে যুবলীগ কর্মীর তাণ্ডব: মা-মেয়েকে কুপিয়ে জখম

banglarmukh official

সাতলায় বিএনপির সভাপতি-সম্পাদকের বিরুদ্ধে আ’লীগ নেতা মিজানকে অর্থের বিনিময়ে দলীয় সনদপত্র প্রদান করার অভিযোগ

banglarmukh official

তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে গ্রাম পুলিশের বসত ঘরে ভাংচুর

banglarmukh official

এসএসসি পরীক্ষার্থীদের শিক্ষা উপকরণ উপহার দিলো ছাত্রদল

banglarmukh official

মাগুরায় ধর্ষণের শিকার সেই শিশু মারা গেছে

banglarmukh official

শিশু আছিয়ার জানাজায় অংশ নিতে মাগুরায় মামুনুল-হাসনাত-সারজিস

banglarmukh official