ইসরাইলের কাছ থেকে আরো ১০০টি ‘বালাকোট বোমা’ কিনছে ভারত। এ নিয়ে ইসরাইলের সাথে ৩০০ কোটি রুপির চুক্তি করেছে ভারতের বিমানবাহিনী। বৃহস্পতিবার দুই দেশের পক্ষ থেকে এ চুক্তি সই করা হয়।
চুক্তি অনুসারে, আগামী তিন মাসের মধ্যে এই বোমা ভারতীয় বিমানবাহিনীর হাতে তুলে দেবে ইসরাইল। ২৬ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানের বালাকোটে বিমান হামলার সময় এ বোমা ব্যবহার করেছিল ভারত। দুই দেশের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, মোট ১০০টি স্পাইস ২০০০ বোমার চুক্তি করা হয়েছে। ইসরাইলের প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম প্রস্তুতকারী সংস্থা রাফায়েল অ্যাডভান্স ডিফেন্স সিস্টেম বোমা তৈরির কাজটি পেয়েছে। দ্বিতীয়বার নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে ভারতের নতুন সরকার ক্ষমতায় আসার পর এটি প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে প্রথম চুক্তি। ভারতের বিমানবাহিনীর সূত্র জানিয়েছে, জরুরি অবস্থায় বোমাগুলো কেনা হচ্ছে। যেকোনোভাবেই এই বছরের মধ্যে এই কেনাবেচা সেরে ফেলতে চায় ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।
স্পাইস বোমা সাধারণত ৬০ কিলোমিটার মধ্যে আঘাত হানতে পারে। হিসাব করে নির্দিষ্ট লক্ষ্যে বিস্ফোরণ ঘটানোর ক্ষেত্রে এ বোমার জুড়ি নেই। এর পাশাপাশি ইলেকট্রো অপটিক্যাল ইমেজ ধরা পড়ে ক্যামেরায়। গত ১৪ ফেব্রুয়ারি ভারত অধিকৃত কাশ্মিরের পুলওয়ামায় ভারতীয় সিআরপিএফ গাড়িবহরে আত্মঘাতী হামলায় ৪০ জনের বেশি জওয়ানের মৃত্যু হয়। ভয়াবহ এ নাশকতা চালানোর জন্য জইশ-ই-মুহম্মদ নামের একটি সংগঠনকে দায়ী করে ভারত। এর জবাব দেয়ার নামে ২৬ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানে হামলা চালায় ভারত। পাকিস্তানের নিয়ন্ত্রণরেখায় (লাইন অব কন্ট্রোল) ভারতের বিমানবাহিনীর হামলায় ৩০০ জন নিহত হয়েছে বলে দাবি করে ভারত।
ভারতীয় বিমানবাহিনী দাবি করে, ২৬ ফেব্রুয়ারি ভোররাত সাড়ে তিনটা নাগাদ আজাদ কাশ্মিরে ঢুকে পড়ে বিমানসেনার মিরাজ ২০০০ ফাইটার বিমান। তাদের ১২টি মিরেজ ২০০০ জেট বিমান এ হামলায় অংশ নেয় এবং ১ হাজার কেজি বোমা (স্পাইস ২০০০ বোমা) বর্ষণ করে অনেক স্থাপনা গুঁড়িয়ে দিয়েছে।
বালাকোট খাইবার-পাখতুনওয়ার একটি শহর, যা নিয়ন্ত্রণরেখা থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার ভেতরে। সেখানেই জইশ-ই-মুহম্মদের প্রধান শিবির রয়েছে। ফলে সেখানে গিয়েই এই হামলা চালানো হয়। এই হামলার পরই স্পাইস ২০০০ বোমাকে বালাকোট বোমা বলা হচ্ছে। বালাকোটের এই বিমান হামলায় ব্যবহার হয়েছিল স্পাইস ২০০০ বোমা।
উল্লেখ্য, ভারত ওই হামলায় অনেক ক্ষতিসাধনের দাবি করলেও পাকিস্তান জানায়, ভারতের বোমাগুলো ফেলা হয়েছে জনবসতিহীন জঙ্গলে। ফলে মাত্র একজন বেসামরিক লোক আহত হওয়া ছাড়া তাতে কোনো ক্ষতি হয়নি। আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমগুলোর স্যাটেলাইট ইমেজে এবং সরেজমিন অনুসন্ধানে হামলাস্থলটি অক্ষত বলে ধরা পড়ে। এজন্য এ হামলার যথার্থতা ও প্রকৃত ক্ষতিসাধন নিয়ে ভারতের মোদি প্রশাসনকে নানা প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয়।