28 C
Dhaka
জুলাই ৭, ২০২৫
Bangla Online News Banglarmukh24.com
আন্তর্জাতিক জাতীয়

এবারও ঈদের আমেজ নেই রোহিঙ্গা শিবিরে

মুসলমানদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর দরজায় কড়া নাড়লেও এর তেমন কোনে আমেজ নেই কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শিবিরগুলোতে। দ্বিতীয়বারের মতো অত্যন্ত নিরানন্দে এখানে ঈদ পালন করবে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা।

উখিয়া-টেকনাফের ক্যাম্পগুলোতে ঈদকে ঘিরে রোহিঙ্গা শিশু-কিশোররা কিছুটা আনন্দ-উচ্ছ্বাসে থাকলেও বয়স্ক নারী-পুরুষরা নিজেদের ভিটে-বাড়ি ও স্বজন হারানো বেদনার ক্ষত নিয়েই রয়েছে। ক্যাম্পে নিয়ত বেঁচে থাকার সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে অধিকাংশ নিরীহ রোহিঙ্গা। ফলে ঈদের যে স্বাভাবিক উৎসব ও উচ্ছ্বাস তা রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নেই বললেই চলে।

টেকনাফের ডেইলপাড়া গ্রামে বসবাসরত সেতারা বেগম (৪৫)। তার বাড়ি ছিল মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের সিকদারপাড়ায়। তিনি তার ঈদের করুণ অনুভূতির প্রকাশ করতে গিয়ে কান্নাভেজা কণ্ঠে বলেন, ‘গত দুই বছর আগেও ঈদ বলতে আনন্দের কিছু বোঝাতো, এখন তা বিষাদের। এই উদ্বাস্তু জীবনে কী আর সেই আগের ঈদের আনন্দ ফিরে পাবো। নিজের দেশে, নিজের ঘরের ঈদ মানে অন্যরকম খুশির কথা। এখানে রাত পোহালেই প্রতিদিন ত্রাণের আশায় থাকি। ত্রাণ মিললে পেটের ক্ষুধা মিটে। তাই আমরা আর ঈদ নিয়ে ঈদের আনন্দ নিয়ে ভাবি না। তবে ছোটো ছোটো ছেলে-মেয়েদের কথা ভাবি, তাদের ঈদের আনন্দ আর আমাদের ছোটোবেলার ঈদের কথা ভাবতে গেলেই চোখে পানি আসে। মিয়ানমারের সেনারা ঈদের আনন্দ কেড়ে নিয়েছে। এর বিচার একদিন আল্লাহ করবে।

প্রসঙ্গত, মিয়ানমারের রাখাইনে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের ওপর দেশটির সেনা নির্যাতনের ফলে ২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পর থেকে এ পর্যন্ত দশ লক্ষাধিক রোহিঙ্গা পালিয়ে এসেছে। পুরানোসহ উখিয়া ও টেকনাফের ৩০টি শিবিরে ১২ লাখের বেশি রোহিঙ্গা অবস্থান করছে এখন বাংলাদেশে। নতুন করে আসা রোহিঙ্গা এবারসহ দুই রমজানের ঈদ পালন করবে এখানে। উখিয়া-টেকনাফের রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতেও ঈদ আসে ঠিকই, কিন্তু বরাবরই নিরানন্দে কাটছে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা অসহায় রোহিঙ্গা মুসলমানদের ঈদ। উখিয়া-টেকনাফের শরণার্থী শিবিরগুলোতে  পুরনো রোহিঙ্গারা যুগের পর যুগ নিরানন্দে ঈদ উদযাপন করে আসছে। তাদের এই বিষাদমাখা ঈদ আয়োজনে গত দুই বছর ধরে যুক্ত হয়েছে তাদেরই প্রায় ১০ লাখ প্রতিবেশী-স্বজন।

বালুখালী ক্যাম্প থেকে রোহিঙ্গা আলী আকবর (৫৫) জানান, অনেকেই ত্রাণ হিসেবে নতুন জামাকাপড় দিয়েছে। কেউ ফেয়েছে কেউ পায়নি। আমিও পেয়েছি লুঙ্গি-পাঞ্জাবি। তবে আমার ছেলেরা পায়নি। ভাবছি ছোট ছেলেকে কিছু ত্রাণ বিক্রি করে হলেও নতুন জামা কিনে দেবো। গত দুই বছর আগের ঈদে মিয়ানমারে থাকা অবস্থায় প্রত্যেক সন্তানকে নতুন জামা দিয়ে ছিলাম, কিন্তু এপারে আসার পর থেকে নিয়মিত তাদের জন্য খাবার জোগাড় করতে পারছি না, জামা কিভাবে দেই?’

এদিকে রমজান ও ঈদ উপলক্ষে স্থানীয় দরিদ্রদের পাশাপাশি রোহিঙ্গারাও সাহায্যের আশায় কক্সবাজারের বিভিন্ন এলাকায় দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন। কেউ কেউ তাদের যাকাত হিসেবে সাহায্য-সহযোগিতা করছেন বলেও জানান টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের ইউপি সদস্য মোহাম্মদ আলী।

সম্পর্কিত পোস্ট

আইন-বিধি মেনে কাজের গতি বাড়ানোর তাগিদ

banglarmukh official

আছিয়া ধর্ষণ ও হত্যার বিচার ৭ দিনের মধ্যে শুরু হবে: আইন উপদেষ্টা

banglarmukh official

শুক্রবার কক্সবাজার যাচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা ও জাতিসংঘ মহাসচিব

banglarmukh official

শিশু আছিয়ার মৃত্যুতে প্রধান উপদেষ্টার শোক, দ্রুত বিচার নিশ্চিতের নির্দেশ

banglarmukh official

২০২৬ সালেই বাংলাদেশকে এলডিসি থেকে উত্তরণ করা হবে

banglarmukh official

জাতিসংঘ মহাসচিব ঢাকায়

banglarmukh official