অনলাইন ডেস্ক :
তিনদিনের টানা ভারী বর্ষণ ও উজানের পাহাড়ি ঢলে তিস্তা ও ধরলা নদীর পানি বেড়ে চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে লালমনিরহাটে প্রায় ৬ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। অথচ জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাত্র ৪৩ পরিবারকে শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে।
বুধবার (১০ জুলাই) বিকেলে সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ এলাকায় ৪৩ পরিবারের মধ্যে শুকনো খাবার বিতরণ করেন জেলা প্রশাসক আবু জাফর।
স্থানীয়রা জানান, উজানের পাহাড়ি ঢলের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে গত তিনদিনের ভারী বৃষ্টি। এতে লালমনিরহাটের ৫টি উপজেলার তিস্তা ও ধরলা অববাহিকার চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চলগুলো প্লাবিত হয়েছে। তার আগে মঙ্গলবার (০৯ জুলাই) দুপুর থেকে কিছু পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। বৃষ্টি যত বাড়ছে পানিবন্দি পরিবারের সংখ্যা ততই বাড়ছে।
উজানের ঢল ও টানা ভারী বৃষ্টিতে সৃষ্ট জলাবদ্ধতা ও বন্যায় জেলার পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রাম, হাতীবান্ধার সানিয়াজান, গড্ডিমারী, সিন্দুর্না, পাটিকাপাড়া, সিংগিমারী, কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী, কাকিনা, আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা, সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ, রাজপুর, গোকুন্ডা, কুলাঘাট ও মোগলহাট ইউনিয়নের তিস্তা ও ধরলার নদীর চরাঞ্চল প্লাবিত হয়ে পড়েছে। এসব ইউনিয়নের প্রায় ৬ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে বলে স্থানীয়রা দাবি করেছেন।
বুধবার বিকেলে সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে ৪৩টি পানিবন্দি পরিবারের মধ্যে শুকনো খাবার বিতরণ করেন জেলা প্রশাসক। তবে বন্যা ও জলাবদ্ধতায় সবচেয়ে বেশি পানিবন্দি হাতীবান্ধা উপজেলার ৬টি ইউনিয়নে এখন পর্যন্ত কোনো ধরনের ত্রাণ পৌঁছেনি।
হাতীবান্ধা উপজেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন অফিসার ফেরদৌস আলম জানান, তার উপজেলার এক হাজার ৩শ’ পরিবারকে জরুরিভাবে শুকনো খাবার দিতে তালিকা তৈরি করে জেলা ত্রাণ কর্মকর্তার দফতরে পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ পেলে তা লোকজনের মাঝে বিতরণ করা হবে।
আদিতমারী উপজেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন অফিসার মফিজুল হক জানান, তার উপজেলার মহিষখোচা ইউনিয়নের বারঘড়িয়া গ্রামে বুধবার সন্ধ্যায় দুই প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণের মধ্য দিয়ে ত্রাণ বিতরণের উদ্বোধন করা হয়েছে। জেলা থেকে বরাদ্দ পেলে বাকিদের বিতরণ করা হবে।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন অফিসার আলী হায়দার জানান, জেলা অফিসের তথ্যানুযায়ী জলাবদ্ধতায় পানিবন্দি সদর উপজেলার খুনিয়াগাছে ৪৩ পরিবারকে শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। জেলা ত্রাণ তহবিলে এক হাজার ৯৫০ প্যাকেট শুকনো খাবার, ১৫০ মেট্টিক টন জিআর চাউল ও আড়াই লাখ টাকা মজুদ রয়েছে। উপজেলা থেকে তালিকা পেলে বরাদ্দ দেওয়া হবে। তবে পানিবন্দির কোনো খবর তার কাছে নেই বলেও দাবি করেন তিনি।