চেহারা পরিবর্তনের আলোচিত অ্যাপ ফেসঅ্যাপ নিয়ে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই’র তদন্ত চালানো উচিত বলে মনে করেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী সিনেটর চউক শুমার। এই অ্যাপের মাধ্যমে মানুষের ব্যক্তিগত তথ্য হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন তিনি।
বিবিসি জানায়, ২০১৭ সালে একটি রুশ কোম্পানির রিলিজ করা ফেসঅ্যাপ সম্প্রতি ভাইরাল হয়ে পড়ে।
ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, ইনস্টাগ্রামে এই অ্যাপের মাধ্যমে সবাই বাড়িয়ে নিচ্ছেন নিজের বয়স। দুই এক দশক পর নিজেকে দেখতে কেমন লাগবে, সেটি যাচাই করতে নেটিজেনদের মধ্যে রীতিমতো হুড়োহুড়ি পড়ে গেছে।
প্রযুক্তিবিদরা বলছেন, এই অ্যাপ ব্যবহারে ব্যক্তিগত তথ্য বেহাত হয়ে যাচ্ছে। একইভাবে ডেমোক্র্যাট সিনেটর চউক শুমার টুইটারে এক বিবৃতিতে মার্কিন নাগরিকদের ফেসঅ্যাপ নিয়ে সতর্ক করেছেন।
এই অ্যাপের মাধ্যমে সংগৃহীত তথ্য ‘বিদেশি শত্রু দেশের’ কাছে চলে যেতে পারে বলে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন। তিনি গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই-কে দিয়ে এর তদন্ত করার জন্য মার্কিন সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
মার্কিন প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম ফোর্বস জানায়, ২০১৭ সালে রিলিজ হওয়ার পর এখন পর্যন্ত ১০ কোটি মানুষ গুগল প্লে স্টোর থেকে এই অ্যাপ ডাউনলোড করেছে। ১২১টি দেশে আইওএস অ্যাপ স্টোরে এখন শীর্ষে ফেসঅ্যাপ। সব মিলিয়ে ১৫ কোটিরও বেশি মানুষ স্মার্টফোনে এই অ্যাপ ব্যবহার করে নিজের বয়স বাড়িয়ে নিয়েছেন।
ওয়ারলেস নামক একটি রুশ কোম্পানি এই অ্যাপ রিলিজ করে। সেন্ট পিটার্সবার্গ ভিত্তিক কোম্পানিটি এক বিবৃতিতে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তাদের দাবি, অ্যাপটি স্থায়ীভাবে কোনো ছবি সংরক্ষণ করে না। এ ছাড়া কোনো তথ্যও তারা সংগ্রহ করে না। শুধু ব্যবহারকারীদের নির্বাচিত ছবিই এডিট করে তারা আপলোড করে থাকে।
ওয়ারলেস আরও দাবি করে, এই অ্যাপের মূল গবেষণা রাশিয়া থেকে করা হলেও ইউজারদের কোনো তথ্য সেই দেশে পাঠানো হয়নি।
তবে টেক বিশেষজ্ঞরা এই অ্যাপ নিয়ে আপত্তি জানিয়েছেন। প্রযুক্তিবিদ জোশুয়া নোজ্জি টুইটারে এই অ্যাপটি সম্পর্কে একটি পোস্ট দিয়েছেন। তিনি বলছেন, ফোনের ফটো গ্যালারিতে অ্যাপটিকে অ্যাকসেস দেওয়ার পর এটি ধীরে ধীরে স্মার্টফোনের সব ছবির তালিকা প্রস্তুত করা শুরু করে।
প্রযুক্তি বিষয়ক মার্কিন ওয়েবসাইট টেকক্রাঞ্চের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অনেকে গ্যালারিতে বিভিন্ন ব্যাংকিং হিসাবের স্ক্রিনশট রেখে দেন। থাকে আরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ ছবি। অ্যাপ দিয়ে এডিট করার সময় এসব ব্যক্তিগত ছবি এবং স্ক্রিনশট সরিয়ে ফেলা উচিত।