27 C
Dhaka
জুলাই ১৪, ২০২৫
Bangla Online News Banglarmukh24.com
প্রচ্ছদ বরিশাল রাজণীতি

বরিশাল সিটি নির্বাচন: চলছে হাসানাত-সরোয়ারের বাকযুদ্ধ

বরিশাল সিটি কর্পোরেশন (বিসিসি) নির্বাচনকে সামনে রেখে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা মন্ত্রীর পদমর্যাদায় থাকা আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ এমপি ও বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মেয়র প্রার্থী ও সাবেক মেয়র মজিবর রহমান সরোয়ারের সঙ্গে চলছে বাকযুদ্ধ। বিষয়টি নির্বাচনী কৌশল হিসেবে দেখছেন সাধারণ ভোটাররা। আর এ ধরনের অশুভ রাজনীতি থেকে সবার বিরত থাকা উচিত বলে মনে করছেন সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক)।

গত ২ জুলাই আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে বরিশালের বাবুগঞ্জের রহমতপুরে কামিনি ফিলিং স্টেশন চত্বরে কেন্দ্রীয় নেতাদের উপস্থিতিতে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভা হলেও একপর্যায়ে ওই সভা সিটি নির্বাচনী সভায় পরিণত হয়। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান এমপি।

সভায় সভাপতিত্ব করেন বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ এমপি। এ সময় তিনি তার বক্তব্যে বিএনপির মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট মজিবর রহমান সরোয়ারকে সরাসরি খুনি বলেন। ১৯৭৮ সালে বরিশাল টেক্সটাইল মিলে শ্রমিক নেতা সালাম ও ১৯৭৯ সালে কালীবাড়ি রোডের বরিশাল কলেজ মোড়ে কালাম এবং ২০০১ থেকে ২০০৭ সালে কামাল ওরফে পুলিশ কামাল ও শাজাহান গাজী ওরফে ট্যারা শাজাহান হত্যাকাণ্ড ছাড়াও হাবিল, দর্পণ ও মিল্টনকে পঙ্গু করে দেয়া নিয়ে প্রশ্ন তোলেন আবুল হাসানাত।

বিএনপির নেতাকর্মীদের মাধ্যমে আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহর ওই বক্তব্য শুনে ক্ষুব্ধ হন বিএনপির মেয়র প্রার্থী মজিবর রহমান সরোয়ার। এর প্রেক্ষিতে সরোয়ার আওয়ামী লীগ নেতা হাসানাত আব্দুল্লাহর কাছে পাল্টা প্রশ্ন রাখেন। তিনি বলেন, এখন যদি বলি বড় ভাই (আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহকে ইঙ্গিত করে) বিএম কলেজের জাসদ ছাত্রলীগ নেতা নজরুল, ছদরুল ও সমরেশ হত্যাকাণ্ড আপনি ঘটিয়েছেন। তাহলে আপনি কি বলবেন।

আওয়ামী লীগের ওই আলোচনা সভায় উপস্থিত মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি অ্যাডভোকেট গোলাম আব্বাস চৌধুরী দুলাল বলেন, বিএম কলেজের জাসদ ছাত্রলীগ নেতা সমরেশ, নজরুল ও ছদরুল গুম-খুন হয়েছিল। ওই হত্যাকাণ্ডে তৎকালীন স্থানীয় আওয়ামী লীগের হাত রয়েছে বলে অনেকে সন্দেহ করলেও আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহর নামে কোনো মামলা হয়নি। সমরেশ, নজরুল, ছদরুল হত্যাকাণ্ড নিয়ে ৪৪ বছর পর আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহর নাম জড়িয়ে বক্তব্য দিয়ে বিএনপির মেয়র প্রার্থী সরোয়ার নোংরা রাজনীতির খেলায় মেতেছেন।

দুলাল আরো বলেন, বিএনপির মেয়র প্রার্থী মজিবর রহমান সরোয়ার তার হলফনামায় একাধিক খুন এবং অঙ্গহানি মামলার আসামি বলে উল্লেখ করেছেন। হলফনামার সূত্র ধরে আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ ওই সভায় তার বক্তব্যে বলেছেন, যার (সরোয়ার) রাজনীতি হত্যাকাণ্ডের মধ্য দিয়ে, যিনি বহু মানুষকে চিরতরে পঙ্গু করে দিয়েছেন তাকে মানুষ ভোট দেবে কেন। সভায় খুনিকে ভোট না দিয়ে উন্নয়নের প্রতীক নৌকা মার্কার প্রার্থীকে ভোট দিয়ে বরিশালের উন্নয়ন ত্বরান্বিত করার জন্য ভোটারদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন আবুল হাসানাত।

আর বিএনপির মেয়র প্রার্থী মজিবর রহমান সরোয়ার বলেন, তিনি কারো বিরুদ্ধে বিষদোগার করতে চান না। একজন রাজনৈতিক নেতা প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে তখনই বিষদোগার করেন, যখন তিনি তার (হাসানাত আব্দুল্লাহর বড় ছেলে মেয়র প্রার্থী সাদিক আব্দুল্লাহ) প্রতিদ্বন্দ্বিকে শক্তিশালী মনে করেন। সরোয়ার আরো বলেন, বরিশালবাসী সবার অতীত জানেন। কে কোথায় কি করেছে এটি সবার জানা আছে। মামলার বিষয়ে সরোয়ার বলেন, মামলা যে কারোর নামেই হতে পারে। মামলা হলেই কেউ দোষী হয় না। মিথ্যা মামলার কারণে তার জনসমর্থন বেড়েছে। এ কারণে বরিশাল সদর আসন থেকে চারবার এমপি এবং বরিশাল সিটি কর্পোরেশন থেকে প্রথম মেয়র নির্বাচিত হন।

আওয়ামী লীগ ও বিএনপির একাধিক নেতা বলেন, যখন কোনো দলের শীর্ষ নেতা একটি বিষয় নিয়ে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে বিষদোগার করেন, তখন তার প্রভাব পড়ে তৃণমূল নেতাকর্মীদের মাঝেও। গত ২৫-৩০ বছরেও বরিশালে এমন পাল্টা-পাল্টি বিষোদগার হয়নি। সিটি নির্বাচন ঘিরে দুই নেতার পাল্টা-পাল্টি বিষোদগারের প্রভাব আগামী ৩০ জুলাইয়ের ভোটেও পড়তে পারে বলে আশঙ্কা তাদের।

এ বিষয়ে সচেতন নাগরিক কমিটির (সনাক) সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট মানবেন্দ্র বটব্যাল বলেন, রাজনীতিতে এ ধরনের কাদা ছোড়াছুঁড়ি কোনো সুষ্ঠু রাজনীতির পরিচয় নয়। কারো কোনো অতীত নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করা উচিত নয়। এটা রাজনীতির জন্য অশুভ লক্ষণ। এ ধরনের অশুভ রাজনীতি থেকে সবার বিরত থাকা উচিত।

উল্লেখ্য, বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহর বড় ছেলে মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ আওয়ামী লীগ থেকে মেয়র প্রার্থী হয়েছেন। প্রার্থী হওয়ার পর থেকে সাদিককে যে কোনো ধরনের সাক্ষাৎকার থেকে বিরত রাখা হয়েছে। এ জন্য মুখপাত্র নিয়োগ করা হয়েছে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম আব্বাস চৌধুরী দুলালকে।

সম্পর্কিত পোস্ট

বরিশালে যুবলীগ কর্মীর তাণ্ডব: মা-মেয়েকে কুপিয়ে জখম

banglarmukh official

সাতলায় বিএনপির সভাপতি-সম্পাদকের বিরুদ্ধে আ’লীগ নেতা মিজানকে অর্থের বিনিময়ে দলীয় সনদপত্র প্রদান করার অভিযোগ

banglarmukh official

তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে গ্রাম পুলিশের বসত ঘরে ভাংচুর

banglarmukh official

এসএসসি পরীক্ষার্থীদের শিক্ষা উপকরণ উপহার দিলো ছাত্রদল

banglarmukh official

আইন-বিধি মেনে কাজের গতি বাড়ানোর তাগিদ

banglarmukh official

মাগুরায় ধর্ষণের শিকার সেই শিশু মারা গেছে

banglarmukh official