27 C
Dhaka
জুলাই ১৩, ২০২৫
Bangla Online News Banglarmukh24.com
প্রচ্ছদ বরিশাল

বরিশাল সিটি নির্বাচন: সবচেয়ে ধনী সরোয়ার দ্বিতীয় তাপস পিছিয়ে সাদিক

বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন কমিশনে মনোনয়নপত্র দাখিল করা আট প্রার্থীর মধ্যে সবচেয়ে বিত্তশালী বিএনপির অ্যাডভোকেট মজিবর রহমান সরোয়ার। গাড়ি, বাড়ি, ফ্ল্যাট এবং নগদ অর্থসহ বিপুল বিত্তবৈভবের মালিক তিনি। এর বিপরীতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহর তেমন কিছু নেই বললেই চলে। এ আট প্রার্থীর মধ্যে সবচেয়ে দরিদ্র বাসদের মনীষা চক্রবর্তী। মেয়র হওয়ার লড়াইয়ে নামা তাদের মধ্যে একজন চিকিৎসক, একজন স্বশিক্ষিত এবং একজন পেশাদার আইনজীবী। শিক্ষকতা পেশায় থাকা একমাত্র প্রার্থী তার পড়াশোনা শেষ করেছেন মাদ্রাসা শিক্ষায়। এ ছাড়া এ আট প্রার্থীর মধ্যে মাত্র তিনজন ছাড়া অন্য সবার বিরুদ্ধে হত্যা-রাহাজানি, দুর্নীতি, হামলা, ভাংচুর ও প্রতারণাসহ বিভিন্ন মামলা রয়েছে।
৩০ জুলাই অনুষ্ঠেয় সিটি নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দাখিল করেছেন বিএনপির অ্যাডভোকেট মজিবর রহমান সরোয়ার। দলের যুগ্ম মহাসচিব এবং বরিশাল মহানগর বিএনপির সভাপতি সরোয়ার বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র। এ ছাড়া টানা পাঁচবার এমপি, জাতীয় সংসদের হুইপ এবং জেলা মন্ত্রীর দায়িত্বও পালন করেছেন তিনি। এবার মেয়র পদে মনোনয়ন দাখিল করা সরোয়ারের হলফনামায় নিজের সম্পদের বর্ণনাসহ নানা তথ্য দিয়েছেন তিনি। অর্থসম্পদ প্রশ্নে সরোয়ারের বার্ষিক আয় ৪৮ লাখ ৭০ হাজার ৯৮৮ টাকা। এ ছাড়া নগদ অর্থ রয়েছে ১০ লাখ। শেয়ার-বন্ডসহ এসব খাতে তার জমা টাকার পরিমাণ ৮৫ লাখ টাকা। দুটি প্রাইভেট কার এবং একটি জিপসহ তিনটি গাড়ি রয়েছে তার। হলফনামায় দেয়া তথ্যানুযায়ী এসব গাড়ির দাম ৮২ লাখ ৫০ হাজার টাকা। এ ছাড়া ৫০ তোলা সোনা এবং প্রায় ১৪ লাখ টাকার আসবাবপত্র রয়েছে তার। হলফনামায় দেয়া তথ্যানুযায়ী, তিনটি আগ্নেয়াস্ত্র রয়েছে এই বিএনপি নেতার। এগুলো হচ্ছে- ৩২ বোর রিভলবার একটি, ৭ এমএম রাইফেল একটি এবং ২২ বোর রাইফেল একটি। মোট ৪.৬৩ একর জমি রয়েছে সাবেক এই মেয়রের। এর দাম ১৬ লাখ ৯ হাজার ৪২৬ টাকা। এ ছাড়া তিনটি ফ্ল্যাট ও একটি টিনশেড ঘরের মালিক তিনি। এসবের মূল্য তিন কোটি ১৪ লাখ ১৮ হাজার টাকা। কোথাও কোনো দায় দেনা কিংবা ঋণ নেই মজিবর রহমান সরোয়ারের।
আওয়ামী লীগের প্রার্থী সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ পেশায় একজন ব্যবসায়ী। বাড়ি ভাড়া, ব্যবসা এবং বেতন বাবদ বছরে তার মোট আয় ছয় লাখ ১৫ হাজার ৪০০ টাকা। নগদ জমার পরিমাণ ছয় লাখ ৮১ হাজার। এ ছাড়া সঞ্চয়পত্র আছে দুই লাখ টাকার। রি-কন্ডিশন্ড একটি মাইক্রোবাস আছে সাদিক আবদুল্লাহর। সম্পদ বলতে রয়েছে রাজউকের পূর্বাঞ্চলে একটি আবাসিক প্লট এবং ঢাকার নিকেতনে একটি ফ্ল্যাট। দায়দেনা কিংবা কোনো প্রকার ঋণ নেই বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের এই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের। এ ছাড়া নেই কোনো আগ্নেয়াস্ত্র। আট মেয়র প্রার্থীর মধ্যে দ্বিতীয় বিত্তশালী জাতীয় পার্টির ইকবাল হোসেন তাপস। এই নেতার আয়ের উৎস ব্যবসা। বার্ষিক আয় ৫৪ লাখ ৮৮ হাজার ৪৮৫ টাকা। নগদ ৯৩ লাখ ৪৯ হাজার ৭৯৬ টাকাসহ বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা এবং বিভিন্ন ব্যবসায় বিনিয়োগের শেয়ার মিলিয়ে তার রয়েছে মোট এক কোটি ৬৪ লাখ ৮৭ হাজার ৯১৮ টাকা। বিচারাধীন অবস্থায় থাকা দুটি মামলার আসামি তাপসের গাড়ি আছে একটি। হলফনামায় দেয়া তথ্যানুযায়ী তার মূল্য ১৯ লাখ ৯৯ হাজার ২৬৭ টাকা। ৬০ তোলা স্বর্ণ ছাড়াও তার রয়েছে ৫১ হাজার ৫৬৫ টাকার আসবাবপত্র। ব্যাংকে রয়েছে ২৫ লাখ ১০ হাজার ২৩৩ টাকার ঋণ। নিজস্ব জমি বা বাড়ি বলতে অবশ্য উল্লেখ করার মতো কিছু নেই তার।
চরমোনাই পীরের সংগঠন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ’র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন মাওলানা ওবায়দুর রহমান মাহবুব। মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করা মাহবুবের বার্ষিক আয় দুই লাখ ১৬ হাজার ৬০০ টাকা। একটি যানবাহন আছে। স্বর্ণ আছে আট তোলা, ফ্রিজ ২টি এবং বন্দুক ১টি। ৬ শতাংশ অকৃষি জমিসহ টিনশেড একটি ঘর রয়েছে এ মেয়র প্রার্থীর। কোনো দায়দেনা বা ঋণ নেই। সিপিবির প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দাখিল করেছেন পেশায় আইনজীবী আবুল কালাম আজাদ। আইন পেশায় বছরে তার আয় দুই লাখ ৬০ হাজার টাকা। নগদ জমা আছে ১১ লাখ ২০ হাজার। ৭ ভরি স্বর্ণ থাকলেও কোনো দায়দেনা ঋণ কিংবা জমিজমা নেই তার। চার লাখ ৪৩ হাজার ৭৫০ টাকা বার্ষিক আয় খেলাফত মজলিশের প্রার্থী একেএম মাহবুব আলমের। নগদ জমা অর্থের পরিমাণ ছয় লাখ ৩৪ হাজার ৭৫০ টাকা। সোনা আছে ৮ ভরি এবং ল্যাপটপ ১টি। ১.৩৮ একর জমির মালিক তিনি। আছে একটি আধাপাকা টিনশেড ঘর। তবে কোনো দায়দেনা কিংবা ব্যাংক ঋণ নেই। মাহবুব আলমের শিক্ষাগত যোগ্যতা এমএ। জাতীয় পার্টির বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দাখিল করা বশিরুল হক ঝুনুর শিক্ষাগত যোগ্যতা এসএসসি। বাড়ি ভাড়া বাবদ বার্ষিক আয় দুই লাখ ৪০ হাজার টাকা। বাবার বাড়িতে থাকেন তিনি। কোনো দায়দেনা কিংবা ঋণ নেই তার। ১০ ভরি স্বর্ণ আছে। সিটি নির্বাচনে সবচেয়ে দরিদ্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দাখিল করেছেন বাসদের মেয়র প্রার্থী মনীষা চক্রবর্তী। এমবিবিএস পাস মনীষা পেশায় একজন চিকিৎসক। বরিশাল সিটি কর্পোরেশনে চাকরি করলেও সিটি নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার লক্ষ্যে সেই চাকরি ছেড়ে দিয়েছেন প্রায় দুই মাস আগে। মনীষার বার্ষিক কোনো আয় নেই। নগদ জমা আছে দেড় লাখ টাকা। ব্যক্তিগতভাবে ব্যাংকে জমা ২৭ হাজার ৫০০ টাকার মালিক মনীষার ৫ ভরি স্বর্ণালঙ্কার রয়েছে। কোনো জমি নেই। নেই ব্যাংক ঋণ কিংবা দায়দেনা। পারিবারিকভাবে থাকা পাঁচ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্রের একজন অংশীদার তিনি। এ ছাড়া অর্ধেক ভাগে দুই লাখ ৬৭ হাজার ৯০০ টাকার আরও একটি সঞ্চয়পত্র রয়েছে তার। নির্বাচনী খরচ জোগাতে মাটির ব্যাংক নিয়ে পথে নেমেছিলেন মনীষা। গেল সপ্তাহে দেয়া হিসাব অনুযায়ী, সেই ব্যাংকে জমা টাকার পরিমাণ ছিল প্রায় লক্ষাধিক। তার নির্বাচনী ব্যয় নগরবাসী বহন করবে বলে এক সংবাদ সম্মেলনে ঘোষণা করেছিলেন তিনি।

সম্পর্কিত পোস্ট

বরিশালে যুবলীগ কর্মীর তাণ্ডব: মা-মেয়েকে কুপিয়ে জখম

banglarmukh official

সাতলায় বিএনপির সভাপতি-সম্পাদকের বিরুদ্ধে আ’লীগ নেতা মিজানকে অর্থের বিনিময়ে দলীয় সনদপত্র প্রদান করার অভিযোগ

banglarmukh official

তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে গ্রাম পুলিশের বসত ঘরে ভাংচুর

banglarmukh official

এসএসসি পরীক্ষার্থীদের শিক্ষা উপকরণ উপহার দিলো ছাত্রদল

banglarmukh official

আইন-বিধি মেনে কাজের গতি বাড়ানোর তাগিদ

banglarmukh official

মাগুরায় ধর্ষণের শিকার সেই শিশু মারা গেছে

banglarmukh official