বরিশাল নগরীর বিভিন্ন স্থান জুড়ে গড়ে উঠেছে কয়েক শতাধিক আবাসিক হোটেল এবং বোডিং। এসব আবাসিক হোটেলের অধিকাংশেই নেই অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা। কিছু কিছু আবাসিক হোটেলে থাকলেও তার বেশিরভাগ ত্রুটিপূর্ণ। পর্যাপ্ত অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা না থাকায় আবাসিক হোটেলগুলো রয়েছে চরম ঝুঁকিতে। কোনও দুর্ঘটনা ঘটলেই তাৎক্ষণিক নিয়ন্ত্রণে আনতে বেগ পেতে হবে সংশ্লিষ্টদের। সম্প্রতি আজকের বার্তার অনুসন্ধানে এমন তথ্য উঠে এসেছে।
বরিশাল বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়, বিএম কলেজ, শেবাচিম হাসপাতাল, স্টিডিয়াম, সুবিধা জনক যাতায়াত ব্যবস্থা সহ বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা থাকায় বরিশাল বিভাগের বিভিন্ন জেলা থেকে প্রতিনিয়ত বরিশাল নগরীতে নানা কারনে মানুষের যাতায়াত বাড়ছে। এই সকল মানুষকে কেন্দ্র করে নগরীতে গড়ে উঠেছে শতাধিক আবসিক হোটেল ও বোডিং।
বরিশাল ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স কার্যালয় সূত্রে জানা যায় , বরিশাল জেলায় আনুমানিক ৪০ টি আবাসিক হোটেল রয়েছে। এর মধ্যে ২০ টি ফায়ার সার্ভিস’র লাইসেন্স ভুক্ত হলেও বাকি গুলো লাইসেন্স বিহীন। এছাড়া আবাসিক কোন বোডিং ফায়ার সার্ভিস’র লাইসেন্স এর আওতায় নেই।
কিন্তু এসব আসাসিক হোটেল এবং বোডিং গুলোতে নেই পর্যাপ্ত অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা। নাম মাত্র অনুমোদন নিয়ে এসব আবাসিক হোটেল গড়ে তোলা হয়েছে। অথচ এই বরিশাল দক্ষিনবঙ্গের গুরুত্বপূন্য স্থান হিসেবে বিবেচিত বলে বর্তমান সরকার নানা পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বরিশালের আবাসিক হোটেল ও বোডিং গুলোর অধিকাংশে ফায়ার ফাইটিং প্ল্যান নেই। অগ্নিনির্বাপক গ্যাস সিলিন্ডার আছে অপর্যাপ্ত। এলপি গ্যাস সিলিন্ডার রাখা হচ্ছে যত্রতত্র। ওয়ার্টার রিজার্ভে পর্যাপ্ত পানি থাকছে না। জরুরি মুহূর্তে বের হওয়ার কোনও ব্যবস্থা নেই হোটেল রুমগুলো থেকে। এ কারণে প্রতিমুহূর্তে ঝুঁকিতে রয়েছেন এসব আবাসিক হোটেল ও বোডিং গুলোতে অবস্থানরত মানুষ।
বরগুনা থেকে শেবাচিমে ডাক্তার দেখাতে আসা পারভেজ মাহতাব বলেন, ‘আমার বরিশালে কোন আত্বীয় নেই। অসুস্থতার জন্য শেবাচিমে ডাক্তার দেখাতে এসেছি। বরিশালে একটি বোডিং এ উঠেছি। এখানে আগুন নিভানোর কোন ব্যবস্থা নেই। সারাদেশের যে অবস্থা, আগুন লাগার ঘটনা ঘটলে কী অবস্থা সৃষ্টি হবে আল্লাহই জানেন। এখন থেকে হোটেল ও বোডিং মালিকদের পরিকল্পনা নেওয়া উচিত। কারণ দুর্ঘটনা কাউকে বলে কয়ে আসবে না।’
ভোলা থেকে অফিস’র ট্রেনিং করতে আসা সালমান রেজা বলেন, ‘অনেক হোটেলে এত ছোট সিঁড়ি। কোনও দুর্ঘটনা ঘটলে বের হওয়াও কষ্টকর হয়ে পড়বে। তাই দ্রুত বড় সিঁড়ি বা বিকল্প পথ তৈরি করতে হবে। অন্যথায় এসব হোটেল থেকে মানুষের বের হওয়া কঠিন হয়ে পড়বে। বিশেষ করে কোনও দুর্ঘটনার সময়।’
এ সম্পর্কে বরিশাল ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স’র উপ-সহকারী পরিচালক মোঃ ফারুক হোসেন সিকদার বলেন, সকল আবাসিক হোটেল এবং বোডিং গুলোকে নোটিশ দেওয়া হয়েছে । অনতিবিলম্বে ডিসেম্বর মাসের মধ্যে আমরা সাবাইকে ফায়ার সার্ভিস’র নিয়মের আওতায় আনবো। কেউ এ ব্যাপারে গাফেলতি করলে আমরা জেলা প্রশাসক বরাবর আবেদন করে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করবো।
এ বিষয়ে বরিশাল’র জেলা প্রশাসক এস, এম, অজিয়র রহমান জানান,সকল আবসিক হোটেল এবং বোডিং গুলোতে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। কোনও হোটেল বা বহুতল ভবনে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থায় যাতে ক্রটি না থাকে সেজন্য সতর্ক করা হচ্ছে। সব আবসিক হোটেলকে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থার আওতায় নিয়ে আসা হবে।