বরিশালের মুলাদী উপজেলার কাজিরচর ইউনিয়নের রাঘুয়া কাজিরচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সাপের আতঙ্ক কাটাতে এবার সাপুড়ে এনে বিদ্যালয় থেকে সাপ ধরে নেয়া এবং বালু পড়া ছিটিয়ে দেয়া হয়েছে। তবুও শিক্ষার্থীদের সাপের ভয় কাটেনি।
সোমবার বিকেল ৩টার দিকে উপজেলা শিক্ষা অফিস সাপুড়ে এনে বিদ্যালয় থেকে সাপ ধরে নেওয়ায় এবং বালু পড়া ছিটিয়ে দিয়ে আশ্বাস দেয়ার পরও শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের শঙ্কা কাটেনি।
উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার মো. মনিরুল হক জানান, রাঘুয়া কাজিরচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সাপ আতঙ্ক দেখা দেওয়ায় জেলা শিক্ষা অফিসের নির্দেশে পটুয়াখালী জেলা থেকে দুই জন সাপুড়ে এনে ২টি সাপ উদ্ধার করা হয়েছে। কিন্তু আরও বড় ধরনের বেশ কয়েকটি সাপ রয়েছে বলে জানিয়েছেন সাপুড়েরা। তবে বড় সাপ ধরতে না পারায় আপাতত বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা আসতে সাহস পাচ্ছে না।
উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো. আকবর কবির জানান, দ্রুত সাপ অপসারণের জন্য সাপুড়ে আনা হয়েছিল। কিন্তু দুই জন সাপুড়ে বিদ্যালয়ের বড় সাপ উদ্ধারে ব্যর্থ হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাকির হোসেন জানান, শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার লক্ষ্যে বিদ্যালয়টি সাময়িক বন্ধ রেখে দ্রুত মেঝে ভেঙ্গে নতুন করে নির্মাণ করা হবে।
এদিকে সাপের ভয়ে শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয় আসছে না আর সন্তানের নিরাপত্তার জন্য অভিভাবকরা সন্তানদের বিদ্যালয়ে পাঠাচ্ছেন না। ফলে কত দিনে বিদ্যালয়ের পড়ালেখা শুরু হবে তা কেউ বলতে পারছেন না।
বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জানায়, বৃহস্পতিবার বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির এক শিক্ষার্থী তাদের কক্ষে সাপ দেখতে পেয়ে চিৎকার শুরু করে। ওই সময় তাদের কক্ষে থাকা সকল শিক্ষার্থী আতঙ্কিত হয়ে বাইরে বেরিয়ে আসে। শিক্ষকরা ওই সাপটি মেরে ফেলার পর পরই কক্ষের ভাঙ্গা মেঝের গর্ত থেকে একাধিক সাপ বেরিয়ে আসতে শুরু করলে আতঙ্কিত শিক্ষার্থীরা বাড়ি চলে যায়। ওই দিন দুইটি সাপ মারা হয়।
শনিবার সকালে প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকরা বিদ্যালয় এসে কেচিগেটের সঙ্গে সাপ পেঁচানো দেখে স্থানীয়দের সঙ্গে নিয়ে বিদ্যালয়ের মেঝের কিছু অংশ ভেঙ্গে সাপের ডিম, বাচ্চা ও অগণিত সাপ দেখতে পায়। ওই দিন ১৭টি সাপ মারা হয়।
রোববার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত স্থানীয়রা ওই বিদ্যালয়ের বিভিন্ন কক্ষ থেকে অন্তত ৪২টি সাপ মেরে ফেলেন।
সোমবার দুপুরে সাপুড়ে নিয়ে এসে আরো দুইটি সাপ ধরা হয়। কয়েক দিন ধরে শ্রেণিকক্ষে সাপের উপদ্রবের কারণে শিক্ষার্থীরা স্কুলে যাওয়া বন্ধ রেখেছে।