আমাজন পুড়ছে তিন সপ্তাহ ধরে, নেভানোর কোনো উদ্যোগ নেই। এমনভাবেই সেটা পুড়েছে যে হাজার কিলোমিটার দূরে সাওপাওলোও ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হচ্ছে। তিন সপ্তাহ ধরে পুড়ছে আর আমরা এতো পরে জানছি, কারণ গণমাধ্যমগুলোতে এটা তেমন প্রচারে আসেনি দুই সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও। এই মিডিয়া ব্ল্যাকআউটের পেছনে হয়তো আছে কর্পোরেট স্বার্থ। ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট বলসোনারোর নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি হলো আমাজনকে কর্পোরেটের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া।আমাজনকে বলা হয়ে থাকে বিশ্বের ফুসফুস। বিশ্বের সর্ববৃহৎ রেইন ফরেস্টের কার্বন শুষে নেয়া আর অক্সিজেন দেয়ার ক্ষমতার ফলেই তাকে সেটা বলা হয়। পৃথিবীর ভূমির ২ শতাংশজুড়ে থাকা রেইন ফরেস্টগুলো প্রাণী ও উদ্ভিদের ৫০ শতাংশের আবাসস্থল। এগুলো পৃথিবীর তাপমাত্রা ও জলবায়ুর ভারসাম্য রক্ষার জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। আমাজনকে তাই কর্পোরেটের জন্য উন্মুক্ত করার বিরুদ্ধে বিরোধিতা ছিলো ব্রাজিলেও। এখন ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট বিরোধিতাকারীদের বিরুদ্ধেই ষড়যন্ত্রের গল্প ফাঁদছেন। আমাদের সুন্দরবনও এ রকম রেইন ফরেস্ট, তার অনেকখানি ইতোমধ্যেই ধ্বংস হয়েছে। তার আশপাশে বিভিন্ন দূষণকারী ব্যবসা ও শিল্প প্রতিষ্ঠানের অনুমতি দেয়া হয়েছে। সব বিরোধিতা উপেক্ষা করে সেখানে কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র করা হচ্ছে।
সেখানে অর্থনৈতিক অঞ্চল বানানোর পরিকল্পনা করা হচ্ছে। সুন্দরবন বা আমাজন কেউই আজ কর্পোরেটের থাবা থেকে মুক্ত নয়। আর প্রকৃতির উপর এই দখলদারিত্ব তার ধ্বংসযজ্ঞ গোটা দুনিয়াটাকেই এক ভয়ংকর বিপদের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।যখন এই বিপদের ভয়াবহতা মানুষ বুঝতে পারবে তখন অনেক দেরি হয়ে যাবে। সেটা ঠেকানোর সময় আর অবশিষ্ট থাকবে কিনা সন্দেহ। কারণ এসবের ভয়াবহতা চেপে রেখে এগুলোকে উন্নয়ন বলে গেলানো গোষ্ঠীই এখন দেশে দেশে ক্ষমতায়। যেভাবে আমাজনের আগুনের ভয়াবহতা চেপে রাখা হয়েছে তেমনিভাবে চেপে যাওয়া হচ্ছে আরও অনেক কিছু। আমাজনের আগুন আসলে আমাদের ভবিষ্যৎ পুড়ে যাওয়ার বার্তা দিয়ে যাচ্ছে। ফেসবুক থেকে