বরিশালে কোন রকম কেরিং বা মেশিনারিজ ব্যবস্থা না থাকায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বিভিন্ন উঁচু দালানকোঠায় কাজ করে যাচ্ছে খেটে খাওয়া অনেক নির্মান শ্রমিকরা। সামান্যতম রশি ও বাঁশের তৈরি দোলনা বানিয়ে উঁচু বিল্ডিং এ কাজ করে যাচ্ছে শ্রমিকরা।
যার থেকে ৯৫শতাংশ মৃত্যু ঝুঁকি বিরাজমান। বরিশাল শহরের ব্যাংঙের ছাতার মত গড়ে উঠছে অনেক উঁচু উঁচু দালান ও শপিং কমপ্লেক্স। যেখানে প্রতিনিয়ত মাথার ঘাম পায়ে ফেলে কাজ করে যাচ্ছে নির্মান শ্রমিকরা। কিন্তু এসব শ্রমিকরা তাদের শ্রম দিয়ে কাজ করে গেলেও তাদের সামান্যতম মৃত্যর চিন্তা করছে না ভবন মালিকরা।
প্রতিদিনের হাজিরা দিয়েই দায় সারছে তারা। কেননা বিল্ডিং থেকে কোন শ্রমিকের মৃত্যু হলে কিছু টাকা পরিবারকে ধরিয়ে দিয়েই সব শেষ। জীবনের মুল্য কি তাহলে সামান্য কিছু টাকা ! নির্মান শ্রমিক মোঃ সোহলে রানা জানান, আমরা পেটের দায়ে কিছু টাকার বিনিময়ে এসব বড় বড় বিল্ডিং এ কাজ করি। বাহিরের দেয়ালে প্লাস্টার দেয়ার সময় রশিতে খুব শক্তভাবে ঝুলে থাকতে হয়। আর কোন ভাবে পা ফসকে কিংবা অন্যমনস্ক হলেই সব শেষ।
অনেক ঝুকি নিয়ে কাজ করতে হয়। কোন রকম কেরিং এর ব্যবস্থা নেই আমাদের বরিশালে। মাঝে মাঝে কিছু কিছু মালিকদের কেরিং ব্যবস্থা করতে দেখা যায় যা অতিদূর্লভ। কিন্তু সব মালিকরা যদি কেরিং সুবিধা দিত তাহলে আমাদের জীবনের ঝুকি নিয়ে কাজ করতে হতো না। এদিকে রং মিস্ত্রি আলমগীর জানান, আমাদের বিল্ডিং এর রংঙের কাজ পুরোটাই রশি ও বাঁশের তৈরি দোলনা দিয়ে চালিয়ে যেতে হয়। দেখা গেছে অনেক সময় রং ছিটকে চোখে পড়ে তখন দেখার সময় থাকেনা কোথায় পাড়া দিচ্ছি। এমনকি তখন পড়ে যাওয়ারও ভয় থাকে। এ ব্যপারে কেরিং এর কথা মালিকদের জানালে তারা বলেন এভাবে কাজ করতে পারলে করো নয়তো চলে যাও।
আলাদা কেরিং এর ব্যবস্থা করতে হলে বাড়তি টাকার প্রয়োজন। সরেজমিনে খোজ নিয়ে দেখা গেছে নগরীর বেশিরভাগ নির্মানধীন সব ভবনেই কেরিং ছাড়া কাজ করছে শ্রমিকরা। এ ব্যাপারে নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক এক ভবন মালিকের কাছে কেরিং এর বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি জানান, আমাদের বরিশালে কেরিং’র ব্যবহার নাই বললেই চলে। তাছাড়া বরিশালে উন্নতমানে কেরিং পাবো কোথায়। আর এসব কেরিং এর ব্যবস্থা করতে গেলে বাড়তি টাকার প্রয়োজন। যে টাকা দিয়ে কেরিং’র ব্যবস্থা করবো তা দিয়ে অতিরিক্ত ৫ জন শ্রমিক খাটানো যাবে।
তবে এ ব্যপারে সচেতন মহল বলছেন শ্রমিকদের জীবন বিপন্ন করে উচু উচু ভবন তৈরি করছে। তাই এদের জীবনের নিরাপত্তার স্বার্থে কেরিং’র ব্যবস্থা অতিব জরুরি। তাই বিষয়টি যথাযথ কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছে সচেতন মহল ও সাধারন শ্রমিকরা।