একাদশ সংসদ নির্বাচন পরিচালনা করতে ১৪০ সদস্যবিশিষ্ট জাতীয় কমিটি গঠন করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। নীতিনির্ধারক পর্যায়ের ২৬ নেতাকে ১৩টি উপকমিটির দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। এছাড়া অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে ৬৪ জেলা টিম গঠন করা হয়েছে।
শনিবার আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। এতে গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনী কর্মকৌশল নিয়ে ৮০ পৃষ্ঠার প্রোফাইল উপস্থাপন করা হবে। এ বৈঠকেই কমিটিসহ প্রস্তাবগুলো চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়া হবে।
আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানিয়েছেন, শনিবার সন্ধ্যা ৭টায় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। এতে সভাপতিত্ব করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও দলটির নির্বাচন পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আওয়ামী লীগের জাতীয় নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারম্যান হলেন এইচটি ইমাম (হোসেন তওফিক ইমাম), সদস্য সচিব দলের সাধারণ সম্পাদক এবং সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। এছাড়া নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্যরা হলেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ ও দলের সহযোগী সংগঠনের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকরা।
১৬ এপ্রিল আনুষ্ঠানিকভাবে আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটি গঠন করা হলেও এর প্রথম বৈঠক হওয়ার কথা ছিল ৬ জুলাই। বিশেষ কারণে সেদিনের বৈঠক বাতিল করা হয়।
জানা গেছে, আওয়ামী লীগের জাতীয় নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য সংখ্যা ১৪০। ৫ সদস্যবিশিষ্ট ১৩টি উপকমিটি প্রস্তাব করা হয়েছে। দফতর ও আর্থিক ব্যবস্থাপনা উপকমিটির আহ্বায়ক এসকে হাবিবুল্লাহ ও সদস্য সচিব কাজী বজলুর রহমান। নির্বাচনী আইন ও বিধি উপকমিটির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বি মিয়া ও সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট ফজিলাতুননেসা বাপ্পি। লিগ্যাল এইড উপকমিটির আহ্বায়ক ড. সেলিম মাহমুদ ও সদস্য সচিব মনিরুজ্জামান। প্রশিক্ষণ উপকমিটির আহ্বায়ক সাবের হোসেন চৌধুরী ও সদস্য সচিব অ্যাড. এবিএম রিয়াজুল কবির কাওছার।
নির্বাচন সংক্রান্ত পর্যবেক্ষক সমন্বয় উপকমিটির আহ্বায়ক ড. আবদুর রাজ্জাক ও সদস্য সচিব লে. ক. মোহাম্মদ ফারুক খান। মিডিয়া উপকমিটির আহ্বায়ক ইকবাল সোবহান চৌধুরী ও সদস্য সচিব মোজাম্মেল বাবু। লিয়াজোঁ উপকমিটির আহ্বায়ক রশিদুল আলম ও সদস্য সচিব ড. সেলিম মাহমুদ। প্রচার উপকমিটির আহ্বায়ক আসাদুজ্জামান নূর ও সদস্য সচিব অসীম কুমার উকিল। পেশাজীবী উপকমিটির আহ্বায়ক ইয়াফেস ওসমান ও সদস্য সচিব ডা. রোকেয়া সুলতানা। নির্বাচন কমিশন সমন্বয় উপকমিটির আহ্বায়ক ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর ও সদস্য সচিব অ্যাড. ফজিলাতুননেসা বাপ্পি। সাংস্কৃতিক, সামাজিক ও ক্রীড়া উপকমিটির আহ্বায়ক গোলাম কুদ্দুছ ও সদস্য সচিব মানজার চৌধুরী।
আইটি উপকমিটির আহ্বায়ক মোস্তাফা জব্বার ও সদস্য সচিব জোনায়েদ আহম্মেদ পলক। বিদেশি মিশন বা সংস্থা উপকমিটির আহ্বায়ক ড. দীপু মনি ও সদস্য সচিব অ্যাম্বাসেডর মোহাম্মদ জমির। দলের কেন্দ্রীয় কমিটি এবং সহসম্পাদকদের মধ্যে যারা দক্ষ ও নির্বাচন করতে অনিচ্ছুক তারাও উপকমিটিতে থাকছেন বলে জানা গেছে।
এছাড়া সরকারের সাবেক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে ৬৪টি জেলা কমিটি গঠন করা হয়েছে। ঢাকা জেলার দায়িত্বে আছেন সাবেক উপসচিব আবুল মকসুদ, আবুল কাসেম হাওলাদার ও সাবেক এসপি মোস্তাক হোসেন খান।
আওয়ামী লীগের আরেকটি সূত্র জানিয়েছে, শনিবারের জাতীয় নির্বাচন পরিচালনা কমিটির বৈঠকে নির্বাচনী প্রচারণা, এজেন্ট প্রশিক্ষণ, ভোটকেন্দ্রভিত্তিক কমিটি গঠন, নির্বাচনসংশ্লিষ্ট তথ্য সংরক্ষণ এবং নির্বাচনী পর্যবেক্ষণ করার কাজ সরাসরি তদারকির সিদ্ধান্ত হবে। এছাড়া গত ১০টি নির্বাচনের পরিসংখ্যান, বর্তমান এমপিদের হালনাগাদ তথ্য, বিনা ভোটে কারা নির্বাচিত, দলের ও দলের বাইরে কার কি অবস্থান তা তুলে ধরা হবে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সামনে। এজন্য ৮০ পৃষ্ঠার একটি প্রোফাইল প্রস্তুত করেছে আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটি।