শেবাচিম প্রতিনিধি:
বরিশাল শেরই বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় (শেবাচিম) হাসপাতালে কর্মরত সেবক-সেবিকাদের (নার্স) প্রতিজনের বেতনের উপর ২০ টাকা করে ভাগ বসিয়েছে স্বাধীনতা নার্সেস পরিষদ (স্বানাপ) নামক একটি সংগঠন। সংগঠনের শেবাচিম শাখার নেতারা অনলাইনে বেতন তুলে দেয়ার নামে গত আগস্ট মাস থেকে নার্সদের কাছ থেকে ২০ টাকা করে নিচ্ছেন। বেতন উত্তোলনের আবেদনের জন্য কম্পিউটার ব্যবহারে যাবতীয় খরচের কথা বলে এ টাকা নেয়া হচ্ছে।
ভুক্তভোগী নার্সরা অভিযোগ করেছেন, সরকারি প্রতিষ্ঠান হিসাবে কম্পিউটারসহ যাবতীয় সরঞ্জাম (কাগজ-কালি-ইন্টারনেট বিল) রাষ্ট্রীয়ভাবে বহন করা হয়। অথচ হাসপাতালে কর্মরত প্রায় ৭০০ নার্সের কাছ থেকে অহেতুক ২০ টাকা করে নিয়ে আত্মসাত করছেন স্বানাপ নেতারা। এনিয়ে হাসপাতালের নার্সদের মধ্যে অসন্তোষ বিরাজ করছে।
শেবাচিম হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, সেখানে ৭৭৯ জন নার্স কর্মরত আছেন। অনলাইন প্রথা চালু হওয়ার পর গত আগস্ট মাসে প্রথম স্বানাপের মাধ্যমে বেতন তুলেছেন প্রায় ৭০০ জন। ২০ টাকা করে তাদের কাছ থেকে মোট ১৫ হাজার ৫০০ টাকা নিয়েছেন স্বানাপ নেতারা।
টাকা নেয়ার কথা স্বীকার করে স্বানাপ’র শেবাচিম শাখার সভাপতি সিনিয়র নার্স মোস্তাফিজুর রহমান দাবি করেন, সংগঠনের মাধ্যমে ৬৭৯ জন আগস্ট মাসের বেতন তুলেছেন। কাগজ, কলম কালি ও নেট ফি বাবদ সর্বনিম্ন ফি ২০ টাকা করে নেয়া হয়েছে। যাবতীয় কাজ সম্পাদন করতে ৮ হাজার টাকা ব্যয় হয়েছে। অবশিষ্ট টাকায় সংগঠনের সকলকে নিয়ে ‘ভোজ’ করেছেন।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বিষয়টি নিয়ে যেহেতু চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে, আগামী মাস থেকে এটা তারা নাও করতে পারেন।
সাধারণ নার্সরা জানান, প্রথমবারের মতো অনলাইনে চলতি সেপ্টেম্বরে গত আগস্ট মাসের বেতন তুলেছেন। এর আগে ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে হিসাব শাখা থেকে তারা বেতন পেতেন।
নার্সরা অভিযোগ করেন, অনলাইন প্রথায় প্রত্যেকের হিসাব নম্বরে টাকা জমা হবে। তার আগে বেতন অনুমোদনে যাবতীয় কার্যক্রম অনলাইনে সম্পন্ন হবে হিসাব শাখায়। রেভিনিউ স্ট্যাম্প বাবদ ১০টাকা বেতন থেকে কাটা যায়। কিন্তু স্বানাপ নেতারা হিসাব শাখার পরিবর্তে ২০ টাকার বিনিময়ে তাদের সংগঠনের মাধ্যমে বেতন অনুমোদনের কার্য সম্পাদন করতে সকল নার্সকে বাধ্য করেছেন। হাসপাতালের কম্পিউটার, কাগজ, কালি ব্যবহার করেই তারা বেতন থেকে অর্থ নিয়েছেন। এ নিয়ে নার্সদের মধ্যে চরম অসন্তোষ বিরাজ করছে।
শেবাচিম হাসপাতালের নার্সিং সুপারিনটেনডেন্ট সেলিনা আক্তার বলেন, অনলাইনে বেতন উত্তোলনের জন্য ১০ জন নার্সকে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। প্রশিক্ষণপ্রাপ্তরা আপাতত এ কাজটি করবেন এবং অন্যদের প্রশিক্ষণ দেবেন। পরবর্তীতে সকলে যার যার বেতন আবেদন নিজেই করতে পারবেন। কিন্তু এ কাজ বাবদ ২০ টাকা করে অর্থ নিয়েছেন স্বানাপ নেতারা এমনটাই তিনি জেনেছেন। যেহেতু এ নিয়ে অভিযোগ উঠেছে সেহেতু কেনই বা টাকা নিয়ে একটি সংগঠন এ কাজ করবে।
সরকারিভাবে যদি কাগজ-কালি দেয়া হয়ে থাকে তাহলে বেতন থেকে অর্থ নেয়ার বিষয়টি তা খতিয়ে দেখবেন।