এপ্রিল ৩০, ২০২৫
Bangla Online News Banglarmukh24.com
জাতীয় প্রচ্ছদ প্রশাসন রাজণীতি

১৬৪৩০’ নম্বরে আইনি সহায়তা পেয়েছেন ৩২ হাজার

কাজী সাইফুলঃ

দরিদ্র, অসহায়, নির্যাতিতসহ পিছিয়ে পড়া সব শ্রেণিপেশার মানুষের আইনগত অধিকার প্রতিষ্ঠার অংশ হিসেবে ‘১৬৪৩০’ নম্বরে আইনি সহায়তা দেওয়া হয়।

টোল ফ্রি এই নম্বরটির যাত্রা শুরুর পর থেকে এতে ফোন করে আইনি সহায়তা নিয়েছেন ৩২ হাজার ৮৮৬ জন। এর মধ্যে নারী ৯ হাজার ৮৮৭ জন এবং পুরুষ ২২ হাজার ৯৯৯ জন। ২০১৬ সালের ২৮ এপ্রিল টোল ফ্রি ১৬৪৩০ নম্বরটি উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এরপর থেকেই সরকারি আইনি সহায়তায় ‘জাতীয় হেল্পলাইন’ হিসেবে নম্বরটি ব্যবহৃত হচ্ছে। যা সরকারি অর্থায়নের মাধ্যমে ‘সরকারি আইনি সেবার মানোন্নয়নে সহায়তা প্রদান’ প্রকল্পের অধীনে জাতীয় পর্যায়ে কাজ করছে এই কলসেন্টার সার্ভিস। জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থা থেকে পাওয়া তথ্য অনুসারে ২০১৬ সালের ২৮ এপ্রিল টোল ফ্রি সার্ভিসটি চালুর পর একই বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত মোট ১১ হাজার ১৫ জন নারী-পুরুষ এর মাধ্যমে সেবা নিয়েছেন।

এরপর ২০১৭ সালে সেবা নেন ১১ হাজার ১০৬ জন। চলতি বছরের জুলাই পর্যন্ত ৩ হাজার ৮৬ জন নারী এবং ৭ হাজার ৬৭৯ জন পুরুষ, অর্থাৎ মোট ১০ হাজার ৭৬৫ জন ভুক্তভোগী এর সুফল ভোগ করেছেন। আর লিগ্যাল এইডের এই সফলতার পেছনে সার্বিকভাবে সহায়তা করেছে সরকারের আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়। লিগ্যাল এইডের এমন সফলতার পেছনে দুইটি কারণ রয়েছে বলে মনে করেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।

প্রথমত, টোল ফ্রি লিগ্যাল এইড সার্ভিসে ফোন করে মানুষ মন খুলে যে পরামর্শ চায়, তা পাচ্ছে। এবং দ্বিতীয়ত, লিগ্যাল এইড সার্ভিসে জনগণ আশানুরূপ সুবিধা পেয়ে বিষয়টিকে তারা অন্যদের মাঝে প্রচার-প্রচারণার মাধ্যমে ছড়িয়ে দিচ্ছে। আনিসুল হক বলেন, ‘আমাদের পক্ষ থেকে এটা তো নতুন একটি সেবা প্রকল্প। তাই এটি শুরু করতে গিয়ে আমরা অনেক অভিজ্ঞতা অর্জন করছি আর সেই অভিজ্ঞতার আলোকে আমরা সেবাটির আরও উন্নতিকরণের চেষ্টা করছি।

আইনি পরামর্শ, আইনগত তথ্য, কাউন্সিলিং, মামলা/মোকদ্দমা করার প্রাথমিক তথ্য, সরকারি আইনি সেবা সম্পর্কিত যেকোনও পরামর্শ, অভিযোগ দিতে ‘১৬৪৩০’ নম্বরে টোল ফ্রি কল করে সহায়তা পাওয়া যাবে। সরকারি ছুটির দিন ছাড়া প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত এই সেবা দেওয়া হয়। কল করা ছাড়াও নম্বরটিতে ম্যাসেজ, লিগ্যাল এইডের ফেইসবুক মেসেঞ্জার বা তাদের অ্যাপস্ ব্যবহার করেও ভুক্তভোগীদের সুবিধা দেওয়ার পথ উন্মুক্ত রাখা হয়েছে। নারী-পুরুষ, শিশু নির্বিশেষে যেকোনও ব্যক্তি এ সুবিধা ভোগ করতে পারেন।

সরকারি আইনি সেবা পাওয়ার যোগ্যতা: যারা দরিদ্র ও অসহায় এবং নিজ খরচে মামলা পরিচালনা করতে পারেন না তাদের জন্য সরকারি খরচে আইনগত সহায়তা দেওয়া হয়।

এই সুবিধা পেতে আবেদন করতে পারেন যারা: (ক) অসচ্ছল বা আর্থিকভাবে অসচ্ছল ব্যক্তি যার বার্ষিক গড় আয় সুপ্রিম কোর্টে আইনগত সহায়তা দেওয়ার ক্ষেত্রে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা এবং অন্যান্য আদালতের ক্ষেত্রে ১ লাখ টাকার বেশি নয়; (খ) কর্মক্ষম নন, আংশিক কর্মক্ষম, কর্মহীন বা বার্ষিক ১ লাখ ৫০ হাজার টাকার বেশি আয় করতে অক্ষম এমন মুক্তিযোদ্ধা; (গ) যেকোনও শ্রমিক যার বার্ষিক গড় আয় ১ লাখ টাকার বেশি নয়; (ঘ) যেকোনও শিশু; (ঙ মানব পাচারের শিকার যেকোনও ব্যক্তি; (চ) শারীরিক নির্যাতন, মানসিক নির্যাতন এবং যৌন নির্যাতনের শিকার নারী ও শিশু; (ছ) নিরাশ্রয় ব্যক্তি বা ভবঘুরে; (জ) যেকোনও উপজাতি, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ও সম্প্রদায়ের লোক; (ঝ) পারিবারিক সহিংসতার শিকার অথবা সহিংসতার ঝুঁকিতে আছেন এমন যেকোনও সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি; (ঞ) বয়স্ক ভাতা পাচ্ছেন এমন যেকোনও ব্যক্তি; (ট) বিজিডি কার্ডধারী দুঃস্থ মাতা; (ঠ) এসিড দগ্ধ নারী বা শিশু; (ণ) যেকোনও প্রতিবন্ধী; (ত) আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে আদালতে অধিকার প্রতিষ্ঠা বা আত্মপক্ষ সমর্থনে অসমর্থ ব্যক্তি; (থ) বিনাবিচারে আটক এমন ব্যক্তি যিনি আত্মপক্ষ সমর্থন করার যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণে আর্থিকভাবে অসচ্ছল; দ) আদালত কর্তৃক আর্থিকভাবে অসহায় বা অসচ্ছল বলে বিবেচিত ব্যক্তি এবং (ধ) জেল কর্তৃপক্ষ কর্তৃক আর্থিকভাবে অসহায় বা অসচ্ছল হিসেবে বিবেচিত ব্যক্তি।

এ জাতীয় আরও কিছু সেবা প্রকল্প বাস্তাবায়নে মন্ত্রণালয় থেকে কোনও উদ্দোগ নেওয়া হচ্ছে কিনা জানতে চাইলে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, ‘সামনে জাতীয় নির্বাচন। তাই আপাতত লিগ্যাল এইডের সঙ্গে নতুন কিছু যুক্ত করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে এইটুকু বলতে পারি, নিশ্চই এই সেবা সম্প্রসারিত হবে।

এবং আরও কিছু সেবা যদি এর সঙ্গে যোগ করে জনগণের উপকরা করা যায়, তবে অবশ্যই আমরা তা করবো। কেননা, লিগ্যাল এইড সার্ভিসটি আমাদের একটি অগ্রাধিকার প্রকল্প।’ জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থার পরিচালক মো. জাফরোল হাছান বলেন, ‘লিগ্যাল এইডের কলসেন্টার সেবার পাশাপাশি এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ইন্টারনেট সুবিধা প্রদান ও প্রত্যেককে পৃথক পৃথক মোবাইল নম্বর সরবরাহের প্রক্রিয়া চলছে। এতে জনগণ আরও দ্রুত সময়ের মধ্যে কর্মকর্তাদের মাধ্যমে আইনি সুবিধা পাবেন বলে আমরা মনে করছি।

সম্পর্কিত পোস্ট

এসএসসি পরীক্ষার্থীদের শিক্ষা উপকরণ উপহার দিলো ছাত্রদল

banglarmukh official

আইন-বিধি মেনে কাজের গতি বাড়ানোর তাগিদ

banglarmukh official

আছিয়া ধর্ষণ ও হত্যার বিচার ৭ দিনের মধ্যে শুরু হবে: আইন উপদেষ্টা

banglarmukh official

শুক্রবার কক্সবাজার যাচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা ও জাতিসংঘ মহাসচিব

banglarmukh official

শিশু আছিয়ার মৃত্যুতে প্রধান উপদেষ্টার শোক, দ্রুত বিচার নিশ্চিতের নির্দেশ

banglarmukh official

মাগুরায় ধর্ষণের শিকার সেই শিশু মারা গেছে

banglarmukh official