ভারত থেকে রপ্তানি বন্ধের খবরে নগরীতে অস্বাভাবিক হারে বেড়ে গেছে পেঁয়াজের দাম। সোমবার থেকে নগরীতে পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১শ টাকা কেজি দরে। তবে স্থান এবং প্রকারভেদে এই দাম ১২০ টাকায় পর্যন্ত ঠেকেছে।
রোববারও পেঁয়াজের কেজি মূল্য ছিল ৭০ টাকা। মাত্র কয়েকঘণ্টার ব্যবধানে পেঁয়াজের এমন মূল্য বৃদ্ধিতে ক্ষোভ বিরাজ করছে সাধারণের মাঝে। যদিও ইতিমধ্যে খোলা বাজারে পণ্য বিক্রি কার্যক্রম শুরু করেছে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)। তবে তাদের বিক্রিত পণ্যের তালিকায় ঠাঁই মেলেনি পেঁয়াজের।
সরবরাহ না থাকায় পেঁয়াজ বিক্রি করা যাচ্ছে না বলে জানিয়েছে টিসিবি সূত্র। ফলে ক্রেতা সাধারণের অসন্তোষ চরমে পৌঁছেছে। অন্যদিকে হাতে গোনা মাত্র গুটিকয়েক জায়গায় পণ্য বিক্রি করছে টিসিবি। এ অবস্থায় টিসিবি’র সরবরাহ পয়েন্ট সংখ্যা বাড়ানো এবং জরুরি ভিত্তিতে পেঁয়াজ সরবরাহের দাবি জানিয়েছেন ক্রেতারা।
গতকাল নগরীর বেশ কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, আমদানি করা পেঁয়াজ ১০০ থেকে ১১০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। দেশি পেঁয়াজের কেজি ঠেকেছে ১২০ টাকায়। তবে পাড়া-মহল্লা এবং অলিগলির দোকানগুলোতে এই দামে হেরফের রয়েছে। ব্যাপ্টিস্ট মিশন রোড এলাকার দোকানি রাহাত জানান, রোববার রাতে পেঁয়াজ পট্টি থেকে আগের দিনের তুলনায় বস্তাপ্রতি ৪ গুণ দামে আমদানি করা পেঁয়াজ কিনতে হয়েছে। তবে দেশি পেঁয়াজ কিনতে পারেননি।
তিনি অভিযোগ করেন, ভারত থেকে রপ্তানি বন্ধের খবরে পেঁয়াজপট্টির সিন্ডিকেট সক্রিয় হয়ে উঠেছে, ফলে অস্বাভাবিকহারে বেড়েছে পেঁয়াজের দাম। এদিকে নগরীতে টিসিবি’র পণ্য বিক্রি কার্যক্রম উদ্বোধন করেছেন জেলা প্রশাসক এসএম অজিয়র রহমান। তবে এই কার্যক্রমের আওতায় শুধু চিনি, মশুর ডাল ও সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে। বিক্রির তালিকায় নেই পেঁয়াজ। সোমবার জাদুঘর সংলগ্ন এলাকায় টিসিবি’র পণ্য কিনতে গিয়েছিলেন অবসরপ্রাপ্ত সরকারি চাকরিজীবী মুনসুর আহমেদ। এসময় তিনি বলেন, গণমাধ্যমে দেখলাম ঢাকায় টিসিবি’র ডিলাররা ৪৫ টাকা কেজিতে পেঁয়াজ বিক্রি করছে। একারণে এখানে এসেছিলাম। তবে তারা পেঁয়াজ বিক্রি করছে না।
জানাচ্ছে সরবরাহ নেই। অপর এক ক্রেতা জানান, টিসিবি হাতেগোনা কয়েক জায়গায় পণ্য বিক্রি করে। অনেকেই বিষয়টি জানেনও না, খুঁজেও পাননা বিক্রির স্থান। তার উপর পেঁয়াজও নেই এদের বিক্রির তালিকায়। টিসিবি সারাদেশে ৪৫ টাকা কেজি দরে পেঁয়াজ বিক্রির ঘোষণা দিলেও বরিশালে টিসিবি’র পণ্য তালিকায় সেটি নেই। এটা অন্যায়।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে টিসিবি’র বরিশাল বিভাগীয় প্রধান মো. আনিছুর রহমান বলেছেন, তাদের পেঁয়াজ সরবরাহ করা হয়নি কেন্দ্রীয় দপ্তর থেকেই। পেঁয়াজ ছাড়া বাকি ৩টি পণ্য- চিনি ৫০ টাকা, মশুর ডাল ৫০ ও সয়াবিন তেল ৮৫ টাকা দরে বিক্রি করছেন তারা। দুর্গাপূজা উপলক্ষে ৫ দিন মাঠ পর্যায়ে পণ্য বিক্রি কার্যক্রম চলবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রতিদিন ৪ জন ডিলার নগরীর ৪টি পয়েন্টে টিসিবি কর্তৃক নির্ধারিত মূল্যে চিনি, মশুর ডাল ও সয়াবিন তেল বিক্রি করবেন। তবে পেঁয়াজের সরবরাহ না থাকায় কিছুই করার নেই তাদের।