শেখ সুমন :
জন্ম নিবন্ধন বর্তমান সমাজে প্রতিটি মানুষের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ন। সমাজের প্রতিটি কাজে জন্ম নিবন্ধন এখন অপরিহার্য । স্কুলে ভর্তী, চাকরী আর বিয়ে প্রতিটি কাজে বয়স প্রমাণ করতে হলেই জন্ম নিবন্ধন প্রয়োজন হয়। আর বাংলাদেশ সরকার প্রতিটি মানুষের জন্য জন্ম নিবন্ধন এখন হাতের নাগালে করে দিয়েছেন। আর সাধারন মানুষ ও সেই সুবিধা গ্রহন করছে।
কিন্তু বয়স?
জন্ম নিবন্ধনে তো একবার বয়স লেখা হলে আর পরিবর্তন করা যায়না। তাহলে কি ভাবে চোদ্দ বছরের ছেলে আঠারো বছর বয়স বানিয়ে চাকরি করে? কি ভাবে পনেরো বছরের মেয়ের বিয়ে হয় ?
বরিশাল নগরীতে এই বয়স পরিবর্তন হয় মাত্র পঞ্চাশ থেকে দেড় শত টাকায়। সময় লাগে মাত্র দুই থেকে পাচঁ মিনিট।
হ্যা ,ঠিক ধরতে পেরেছেন। নগরীর অলিতে গলীতে গজে ওঠা কম্পিউটার দোকান গুলি এই কাজ করছে। নগরীর বিবির পুকুর পাড়,জজ কোর্টের সামনে ,পলাশপুর,বৌ বাজার , বাংলাবাজার ,নতুন বাজার সহ নগরীর বিভিন্ন স্থানের কম্পিউটার দোকানে এই অবৈধ কাজ হয়ে থাকে।
নগরীর পলাশপুর ,বৌবাজার,স্টেডিয়াম কলোনী,রসূলপুর কলোনীর বেশির ভাগ পরিবারের মানুষ এই অবৈধ কাজ করিয়ে থাকে। কারন, এমইপি,অফসোনিন সহ নগরীর কয়েকটি কম্পানীতে চাকরি করার জন্য এই অবৈধ পন্থা অবলম্বন করা হয়। নগরীর বিভিন্ন অফিসে চোদ্দ পনেরো বছরের কর্মচারী কাজ করে এই জন্মনিবন্ধনের মাধ্যমে। আর ঐ সব অফিসে এই নিবন্ধন অনলাইনে চেক না করার ফলে এই ধরনের কাজ করে সুবিধা নিচ্ছে দোকানীরা। যেখানে প্রতিটি কতৃপক্ষের স্বাক্ষর আসল থাকেনা।আর ভুক্তভোগী হচ্ছে সাধারন জনগন। অনেকেই একহাজার টাকায় করিয়ে নিচ্ছে অবৈধ জন্ম নিবন্ধন। যার ফলে বৃদ্ধি পাচ্ছে শিশু শ্রম আর বাল্য বিবাহ। আর প্রশাসন দেখেও নিরব ভূমিকা পালন করছে।
যদি পলাশপুর,বৌবাজার,বিবির পুকুর পাড়ের দোকান গুলিতে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয় তাহলে প্রতিটি কম্পিউটারে পাওয়া যাবে এই অবৈধ কাজের নমুনা।
শিশু শ্রম ও বাল্য বিবাহ নিয়ে কাজ করা একাধিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন যে,যদি এই অবৈধ নিবন্ধন তৈরী বন্ধ করা যায় আর দোষীদের সাষ্তির আওতায় আনা যায় তাহলে শিশু শ্রম ও বাল্য বিবাহ অনেক অংশে কমে যাবে