এবার নতুন একটি খেল দেখালো বরিশাল মেট্রোপলিটন গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। ইয়াবাসহ আটক মুলহোতাকে অর্থসমঝোতায় ছেড়ে দিয়ে নিরাপরাধ যুবককে মামলায় জড়ানো হয়েছে। এক্ষেত্রে আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে- সেই রফদফা করা হয়েছে ঘটনাস্থলেই। যে কারণে পুরো বিষয়টি ফাঁস হয়ে গেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনা মতে- বুধবার গভীর রাতে নগরীর দোপাবাড়ির মোড় এলাকা থেকে ৩০ পিস ইয়াবাসহ ৪ যুবককে আটক করে ডিবি পুলিশ। আটক ওই যুবকদের হাতকড়া পড়িয়ে সাদা রংয়ের একটি মাইক্রোবাসে তুলতে দেখা গেছে এসআই ফিরোজসহ বাহিনীর অপরাপর সদস্যদের। কিন্তু এর মধ্যেই মোটরসাইকেলযোগে দুই যুবক ছুটে আসলে একজন কনস্টেবলের মধ্যস্থতায় আলাপ চলে ঘন্টাব্যাপি। একপর্যায়ে হাতকড়া পরিহিত এক যুবককে গাড়ি থেকে নামিয়ে অন্ধকার গলিতে নিয়ে যাওয়া হয়। মূলত সেখানেই রফাদফা শেষে সেই যুবককে অর্থসমঝোতায় মুক্তি দিয়ে ফিরে আসেন এসআই ফিরোজ।
ওই সময় এসআই ফিরোজের হাতের মুঠোয় টাকার বান্ডিলটি প্রত্যক্ষদর্শীরা স্বচোক্ষে দেখেছে। পরবর্তীতে বাকি ৩ যুবককে নিয়ে যাওয়া হয় ডিবি কার্যালয়ে। অবশ্য সেখানেও হয়েছে আরও একটি রফদফা। ফলে ৩ যুবকের দুই জনকে বিএমপি অধ্যাদেশে প্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। বাকি একজন অর্থাৎ হাসান হাওলাদারকে ৩০পিস ইয়াবা মামলায় অভিযুক্ত করা হয়েছে। অথচ এই হাসান নিজেকে নির্দোষ দাবি করে প্রকৃত মাদক ব্যবসায়ি রাহুলকে ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগ তুলেছে। এমনকি তাকে ছেড়ে দেওয়ার বিনিময়ে ২০ হাজার টাকা এসআই ফিরোজ নিয়েছেন বলেও অভিযোগ তোলা হচ্ছে।
তবে অর্থসমঝোতার পুরো বিষয়টি অস্বীকার করেছেন এসআই ফিরোজ। তবে তিনি যে এক জনকে অর্থের বিনিময়ে ছেড়ে দিয়েছেন সেই বিষয়টি তার সাথে আলাপচারিতায় অনুমান করা গেছে। সংবাদকর্মীর ফোন পাওয়ার পর পরই তিনি ফোনে তথ্য দিতে নারাজ জানিয়ে ডিবি অফিসে ডাকেন। তখন আলোচনার একপর্যায়ে মাদক ব্যবসায়ি রাহুলকে ছেড়ে দেয়ার হেতু কি জানতে চাইলে এসআই ফিরোজ বলেন- তাদের টিম লিডার ডিবি পরিদর্শক মাহবুব উল আলম ঘটনার ব্যাখ্যা দেবেন। কিন্তু ঘটনাস্থলে হাতের মুঠোয় টাকা আসলো কোথা থেকে এমন প্রশ্নে তিনি তালগোল পাকিয়ে ফেলে এই বিষয়ে আর মন্তব্য করেননি।
বরিশাল মেট্রোপলিটন গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার মো. মোয়াজ্জেম হোসেন ভুঞা বলেন- অভিযোগটি তদন্ত করে দেখা হবে। সেখানে প্রমাণ পাওয়া গেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।