34 C
Dhaka
জুলাই ১২, ২০২৫
Bangla Online News Banglarmukh24.com
জাতীয় প্রচ্ছদ

টিএসসি মোড়ে বঙ্গবন্ধুর ৪৩ ফুট প্রতিকৃতি

বেশ খানিকটা দূর থেকে দেখা গেল শিল্পকর্মটি। পেছনে আঁচড়ানো কাঁচা-পাকা চুল, কালো মোটা ফ্রেমের চশমা চোখে খুব চেনা একটি প্রতিকৃতি। পাশেই লেখা কবিতার চরণ, ‘যতকাল রবে পদ্মা যমুনা গৌরী মেঘনা বহমান/ ততকাল রবে কীর্তি তোমার শেখ মুজিবুর রহমান।’ নিচে লেখা, হাতে আঁকা বঙ্গবন্ধুর সর্ববৃহৎ প্রতিকৃতি।
দেড় শ শিল্পীর সার্বিক তত্ত্বাবধানে ৩০ জন শিল্পীর রংতুলিতে উঠে এলেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বঙ্গবন্ধুর ৪৩তম শাহাদতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষেÿসর্ববৃহৎ এ প্রতিকৃতি অঙ্কনের কর্মসূচি হাতে নেয় বাংলাদেশ চারুশিল্পী সংসদ, টিএসসির রাজু ভাস্কর্যের সামনে।

১৫ দিন ধরে শিল্পীদের নিরলস পরিশ্রম নজরে আসে গতকাল মঙ্গলবার। আজ বুধবারও বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় আলোচনায় ছিল বিশাল এ কর্মযজ্ঞ। প্রতিকৃতিটির সামনে উৎসুক মানুষের ভিড় দেখা গেছে। আগ্রহ নিয়ে ছবি তুলেছেন কেউ কেউ।

মঙ্গলবার বিকেল চারটার পর থেকেই দৃশ্যমান হয়ে যায় বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিটি, যার উদ্বোধন করতে এসেছিলেন বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক সচিব ও বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। আরও উপস্থিত ছিলেন শিল্পী হাশেম খান, শাহাবুদ্দিন আহমেদ, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ প্রমুখ। চারুশিল্পী সংসদের সভাপতি অধ্যাপক জামাল আহমেদের সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য দেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক কামাল পাশা চৌধুরী।

তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর এক বিশাল প্রতিকৃতি দেখে খুবই ভালো লাগছে। এর সামনে দাঁড়িয়ে আমার মনে হচ্ছে, বঙ্গবন্ধু আমাকে ডাকছেন।’

তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘যে বঙ্গবন্ধু দেশকে, দেশের সংস্কৃতিকে ভালোবাসতেন, সারা জীবন সংগ্রাম করে দেশকে স্বাধীন করেছিলেন, তাঁর মর্মান্তিক মৃত্যুর দিনে খালেদা জিয়া জন্মদিন পালন করেন। তাঁর বোঝা উচিত, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সম্মেলনে বঙ্গবন্ধু গেলে সবাই তাঁর দিকে নজর রাখতেন। তিনি শুধু বাংলাদেশের নয়, সারা বিশ্বের নেতা।’

শিল্পী শাহাবুদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘পৃথিবীতে অনেক হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। মহাত্মা গান্ধী, কেনেডি, আনোয়ার সা’দাত ছাড়াও আরও অনেক নেতাকে হত্যা করা হয়েছে। কিন্তু আমাদের দেশে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টে যা ঘটেছে, তা পৃথিবীর আর কোথাও ঘটেনি; আর ঘটবে বলেও আমার মনে হয় না। বঙ্গবন্ধু সূর্যের মতোই সত্য। তিনি আমাদের স্বাধীনতা এনে দিয়েছিলেন, সংস্কৃতিকে ভালোবেসে ছিলেন, সকল মানুষকে ভালোবেসে ছিলেন; মাথা উঁচু করে চলতেও শিখিয়েছিলেন।’

সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ বলেন, মুক্তিযুদ্ধের পরাজিত শক্তি বারবার প্রতিশোধ নিতে ইতিহাস থেকে বঙ্গবন্ধুর নাম মুছে ফেলার চেষ্টা করেছে। কিন্তু সেটা সম্ভব হয়নি। চাইলেও কেউ মুছে দিতে পারবে না তাঁর নামটি। তিনি থাকবেন গানের সুরে, কবিতার ছন্দে কিংবা শিল্পীর রংতুলির আঁচড়ে।

সন্ধ্যায় হানিফ খানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে ছিল সাংস্কৃতিক আয়োজন। এতে একক আবৃত্তি করেন আহ্কাম উল্লাহ্, রফিকুল ইসলাম, তামান্না সারোয়ার নীপা, মাসুজ আজিজুল বাশার ও ঝর্না সরকার। একক কণ্ঠে আরিফ রহমান গেয়ে শোনান ‘শোনো একটি মুজিবরের থেকে’, শিমুল সাহা ‘মুজি বাইয়া যাওরে’, আবিদা রহমান ‘বঙ্গবন্ধু লও সালাম’। দলীয় সংগীত পরিবেশন করে বহ্নিশিখা। তাদের শিল্পীদের কণ্ঠে গীত হয় ‘আমরা সবাই বাঙালি’, ‘তোমার ও নাম মুছে ফেলবে এমন সাধ্য কার’ ও ‘সোনা সোনা লোকে বলে সোনা’।

আয়োজনে চারুশিল্পী সংসদের সভাপতি জামাল আহমেদ বলেন, বাংলাদেশের শিল্পীরা নিজেদের মেধা, মনন, শ্রম ও সৃজনশীলতা দিয়ে গোটা বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে সৃষ্টি করে আসছে মহৎ সব শিল্পকর্ম। দেশের জন্য বয়ে আনছে মর্যাদা ও সম্মান। এ আয়োজন সে ধারাবাহিকতারই অংশ। তিনি জানান, সুবিশাল এ কর্মযজ্ঞে অংশ নিয়েছেন দেড় শতাধিক চিত্রশিল্পী। প্রতিকৃতির ছবি নির্বাচন, লে আউট তৈরি, ক্যানভাস প্রস্তুতসহ কারিগরি কাজ শুরু হয় ১লা আগস্ট থেকে। বর্তমানে টিএসসির মিলনায়তন ও সুইমিংপুল চত্বরে হয়েছে ক্যানভাসে লাইন ড্রয়িংয়ের কাজ।

এবার জাতির জনকের ৪৩তম প্রয়াণ দিবসের নিরিখে এই উচ্চতা নির্ধারণ করা হয়েছে। ক্যানভাসের ওপর অ্যাক্রিলিক রঙে আঁকা হয়েছে মূল ছবি। কোনো তুলি বা অন্য কোনো মাধ্যম নয়, ফ্রেমের শরীরে রং লেগেছে শিল্পীদের হাতের আঁচড়ে। এরপর অনেকগুলো টুকরো ফ্রেমের ক্যানভাসে স্বতন্ত্রভাবে একেকটি অংশ এঁকেছেন ভিন্ন ভিন্ন শিল্পী। পরে টুকরোগুলোকে একত্রে জুড়ে দিয়ে তৈরি হয় মূল পূর্ণাঙ্গ প্রতিকৃতি।

৩১ আগস্ট পর্যন্ত প্রদর্শিত হবে চিত্রকর্মটি।

সম্পর্কিত পোস্ট

আইন-বিধি মেনে কাজের গতি বাড়ানোর তাগিদ

banglarmukh official

আছিয়া ধর্ষণ ও হত্যার বিচার ৭ দিনের মধ্যে শুরু হবে: আইন উপদেষ্টা

banglarmukh official

শুক্রবার কক্সবাজার যাচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা ও জাতিসংঘ মহাসচিব

banglarmukh official

শিশু আছিয়ার মৃত্যুতে প্রধান উপদেষ্টার শোক, দ্রুত বিচার নিশ্চিতের নির্দেশ

banglarmukh official

মাগুরায় ধর্ষণের শিকার সেই শিশু মারা গেছে

banglarmukh official

২০২৬ সালেই বাংলাদেশকে এলডিসি থেকে উত্তরণ করা হবে

banglarmukh official