এপ্রিল ২৮, ২০২৫
Bangla Online News Banglarmukh24.com
আদালতপাড়া জাতীয় রাজণীতি

ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় কি ‘চিরস্মরণীয়’?

দেশের সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতি বর্তমানে বিএনপির নিয়ন্ত্রণে। এই বিএনপি নিয়ন্ত্রিত ও পরিচালিত সমিতির এক মতবিনিময় সভায় সম্প্রতি বক্তৃতা দিয়েছেন ড. কামাল হোসেন। তার যুক্তফ্রন্ট এখনও বিএনপি জোটে শামিল হয়নি। কথাবার্তা চলছে।

তার আগেই ড. কামাল হোসেন বিএনপির যৌক্তিক ও অযৌক্তিক দাবিগুলোর পক্ষে উচ্চকণ্ঠে কথা বলতে শুরু করেছেন। তাতে বিএনপির দাবিগুলোর পরিপূরক কিছু নিজস্ব কথাও আছে। তিনি হয়তো ভাবেন, তিনি আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন নেতা, তিনি বিভ্রান্তি সৃষ্টিকারী কথা বললেও কেউ তার প্রতিবাদ করার সাহস পাবে না।

তার এই ধারণাটা সত্য নয়। তিনি যতই নামজাদা মানুষ হোন, তার উদ্দেশ্যমূলক ও বিভ্রান্তি সৃষ্টিকারী কথাবার্তা যে সাধারণ মানুষ বিশ্বাস করে না, তার প্রমাণ অতীতে সব নির্বাচনে দলবলসহ তার শোচনীয় পরাজয়। এমনকি যদু-মধু প্রতিদ্বন্দ্বীর কাছেও।

সেজন্য তিনি সাময়িকভাবে দমে গেলেও আবার একটি সাধারণ নির্বাচন সামনে দেখে নতুন করে জেগে উঠেছেন এবং আওয়ামী লীগের প্রতি বিরূপ দলগুলোর মঞ্চে, সেমিনারে দাঁড়িয়ে আওয়ামী লীগ, বিশেষ করে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে বিষোদ্গার শুরু করেছেন।

সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির মতবিনিময় সভায় তিনি আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে উদ্দেশ্যমূলকভাবে যেসব কথা বলেছেন, তার প্রতিবাদে ঢাকার একটি দৈনিকের কলামে (যুগান্তরে নয়) আমি কিছু না লিখে পারিনি। ড. কামাল হোসেন খুবই জ্ঞানী-গুণী মানুষ হতে পারেন।

তাই বলে দেশের আর সব মানুষকে বোকা মনে করেন কেন? আইনজীবী সমিতির মতবিনিময় সভায় তিনি দেশের সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিল করে সাবেক প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহার দেয়া রায়কে ‘চিরস্মরণীয়’ আখ্যা দিয়ে এই সিনহাকে যারা চাকরিছাড়া, দেশছাড়া করে ছেড়েছেন, তাদের বিচার করে ছাড়বেন বলে হুমকি দিয়েছেন। অতীতে অনেক ব্যাপারে তিনি এই ধরনের হুমকি দিয়েছিলেন। তারপর নিজেই প্রতিপক্ষের ভয়ে দেশ ছেড়ে উধাও হয়ে গেছেন।

আমার মতে, সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায়কে চিরস্মরণীয় নয়, স্মরণীয় রায় আখ্যা দেয়া যেত, যদি বিচারপতি সিনহা এই রায়ের সঙ্গে অবজারভেশনের নামে একটি দীর্ঘ পর্যালোচনা যুক্ত না করতেন।

জুডিশিয়ারির এখতিয়ারের বাইরে গিয়ে তিনি এমন একটি পর্যালোচনা অনাবশ্যকভাবে রায়ের সঙ্গে যুক্ত করেছিলেন, যেটি পাঠ করলে যে কোনো মানুষের ধারণা হবে এটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যমূলক পর্যালোচনা।

এই পর্যালোচনায় সরকার, ক্ষমতাসীন দল, তাদের মন্ত্রী, এমপি- এমনকি পার্লামেন্টকেও এমনভাবে নিন্দা করা হয়েছে, যাতে মনে হতে পারে, জুডিশিয়ারি সরকারের প্রতিপক্ষ এবং প্রতিপক্ষ হিসেবেই এই পর্যালোচনা লেখা হয়েছে এবং রায়ের সঙ্গে যোগ করা হয়েছে।

পরে জানা গেছে, এই পর্যালোচনা বিচারপতি সিনহা নিজে লেখেননি, বাইরে থেকে লিখে তাকে গেলানো হয়েছে। যারা বাইরে থেকে এই বিতর্কিত পর্যবেক্ষণটি বিচারপতি সিনহাকে লিখে দিয়েছেন, তাদের মধ্যে ড. কামাল হোসেনের আইন ব্যবসায়ের এক সহযোগী এবং একটি ইংরেজি পত্রিকার সম্পাদকের নাম বাজারে ছড়িয়েছিল।

এর সত্য-মিথ্যা আমি জানি না। কিন্তু আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে মনে হয়েছে, এই পর্যালোচনাটি লেখা এবং বিচারপতি সিনহাকে দিয়ে তা গেলানোর ব্যাপারে যে গুজব রটেছে, তার পেছনে কিছু সত্য আছে।

গত বছর মে মাসে আমি ঢাকায় যাই। তখনও ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় দেয়া হয়নি। কিন্তু প্রধান বিচারপতি সিনহা কী ধরনের রায় দিতে পারেন, তা নিয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল অত্যন্ত চিন্তিত ছিলেন। সম্ভবত আইনমন্ত্রী আনিসুল হকও চিন্তিত ছিলেন। তার সঙ্গে আমার দেখা হয়নি।

এই সময় একটি বিস্ময়কর ঘটনা ঘটে। আমি সোবহানবাগে এক বন্ধুর বাসায় অবস্থান করছিলাম, এই সময় বিচারপতি এসকে সিনহা নিজে আমাকে টেলিফোন করে জানালেন, আপনাকে আমরা সুপ্রিমকোর্টে আমন্ত্রণ করে এনে একটু সম্মান দেখাতে চাই। আপনি আসবেন কি?

আমি তাকে বিনীতভাবে বলেছি, দেশের সর্বোচ্চ আদালতের কাছ থেকে সম্মান লাভের যোগ্য আমি নই। তবু কয়েক বছর আগে একবার তা পেয়েছি। এখন আপনার সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে দেখা করতে আসতে পারি, যদি আপনি সম্মতি দেন। তিনি বললেন, আপনি আমার বাসায় এলে খুশি হব। কবে আসবেন, বলুন। আমি তাকে একটি তারিখ দেই।

বিচারপতি এসকে সিনহাকে আমি শ্রদ্ধা করতাম, এখনও করি। সুপ্রিমকোর্ট প্রাঙ্গণে মৃণাল হকের তৈরি একটি নারী ভাস্কর্য প্রতিষ্ঠা করে (তখনও ভাস্কর্যটি সরানো হয়নি) তিনি যে শিল্পবোধ ও সাহসের পরিচয় দেখিয়েছেন, সেজন্য তার সঙ্গে পরিচিত হওয়ার আগেই তার প্রতি আমার মনে শ্রদ্ধা জেগেছিল।

তার বাসায় তিনি এবং তার বিদুষী স্ত্রী আমার জন্য রাতের খাবারের আয়োজন করেছিলেন। দীর্ঘকাল পর এই প্রথম তার সঙ্গে আমার আবার সাক্ষাৎ। একথা-সে কথার পর তিনি তার আসন্ন রায় দেয়ার কথা বলে বললেন- এই রায়ে সরকার হয়তো খুশি হবে না।

আমি কী করব, আমি তো বিচার বিভাগের স্বাধীনতা রক্ষার জন্য দায়বদ্ধ। আমি তাকে বলেছি, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা এবং নির্বাহী বিভাগের আওতা থেকে বিচার বিভাগের মুক্তি আমাদের সবার কাম্য।

সেদিন এর বেশি তার সঙ্গে কথা হয়নি। ইতিমধ্যে একদিন অ্যাটর্নি জেনারেলের সঙ্গে দেখা। তিনি আমার পকেটে টুক করে একটা কাগজ গুঁজে দিলেন। বাসায় এসে কাগজটা খুলে দেখি, দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে ষোড়শ সংশোধনী সম্পর্কিত রায় যে ধরনেরই হোক, দেশে তা কী প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে সে সম্পর্কে অ্যাটর্নি জেনারেল আমাকে ব্রিফ করেছেন। আমি সাংবাদিক এসব নিয়ে লেখালেখি করি। ভেবেছি, তিনি এ সম্পর্কে ব্রিফিং দিতে পারেন।

কয়েকদিন পরেই বিচারপতি সিনহার বাড়িতে আবার আমার আমন্ত্রণ। আমার সঙ্গে ছিলেন কয়েকজন বন্ধু। তিনি তাদের ড্রয়িং রুমে বসিয়ে রেখে আমাকে নিয়ে একটি খাস রুমে ঢুকলেন। তারপর যা বললেন, তাতে একটু বিস্মিত হলাম।

তিনি বিভিন্ন মামলায় তার দেয়া রায় এবং বিভিন্ন দেশের বিচারপতিদের বাংলাদেশের বিচারব্যবস্থা সম্পর্কে প্রশংসামূলক বক্তব্যের একটি ফাইল আমার হাতে তুলে দিলেন এবং বললেন, আমি বিচার বিভাগের নিরপেক্ষতার গণ্ডি না ভেঙে আওয়ামী লীগকে অনেক বিচারিক চক্রান্ত থেকে বাঁচানোর চেষ্টা করেছি। আমাকে সন্দেহ করার কোনো কারণ নেই।

আমি জিজ্ঞাসা করেছি, আপনাকে কেউ সরকারবিরোধী বলে সন্দেহ করেন? তিনি বললেন, সরকারের শীর্ষস্থানীয় কেউ কেউ করেন। আমার সম্পর্কে কেউ কেউ প্রধানমন্ত্রীর কান ভারি করার চেষ্টা করছেন। আমাকে হয়তো প্রধান বিচারপতি পদ থেকে সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা হতে পারে।

তাকে জিজ্ঞাসা করেছি, আপনার মনে এ ধরনের সন্দেহ কেন হচ্ছে? তিনি বললেন, আমার প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করেন এমন কিছু প্রাক্তন সহকর্মী আছেন। তাছাড়া আমার কাছে বিখ্যাত আইনজীবীদের অনেকে আসেন, আমাকে নানা ধরনের পরামর্শ, উপদেশ দেন।

আইনের পেশায় তারা আমার সিনিয়র। আমি সবার কথাই শ্রদ্ধার সঙ্গে শুনি। তবে নিজের ইচ্ছায় কাজ করি। আমার কাছে এদের আসা-যাওয়া নিয়েও সরকারের কান ভারি করা হচ্ছে।

আমার একটু শঙ্কাবোধ হল, জিজ্ঞাসা করলাম, আপনাকে ড. কামাল হোসেন এবং তার বন্ধুরা পরামর্শ, উপদেশ দেন কি? তিনি বললেন, আমি কারও নাম করতে চাই না। প্রধান বিচারপতি হিসেবে আমি কারও জন্যই আমার ঘরের দরজা বন্ধ রাখতে পারি না।

তার কথা শুনে আমার মনে হয় দৃঢ়প্রত্যয় জন্মালো প্রধান বিচারপতি যখন ষোড়শ সংশোধনী সংক্রান্ত আপিলের রায় নিয়ে ব্যস্ত, তখন নিশ্চয়ই ড. কামাল হোসেন এবং তার কয়েকজন আইনজীবী বন্ধু প্রধান বিচারপতির স্বনিযুক্ত কনসাইন্স কিপার সেজে এই রায় সম্পর্কে তার নিজস্ব বিচার-বিবেচনাকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছেন।

প্রধান বিচারপতিকে বলেছি, আমি একজন সামান্য সাংবাদিক। আপনাকে পরামর্শ দেয়ার ধৃষ্টতা আমার নেই। আপনি প্রধানমন্ত্রীয় সঙ্গে বসে ভুল বোঝাবুঝিটা দূর করুন। আর যেসব বিজ্ঞ আইনজীবী ও রাজনীতিবিদ আপনাকে রাজনৈতিক মতলব নিয়ে পরামর্শ দিতে আসেন, তাদের কাছ থেকে দূরে থাকুন।

আপনার ও জুডিশিয়ারির ওপর কোনো আঘাত এলে আমার ক্ষুদ্র সাধ্য অনুযায়ী তার প্রতিবাদ করব। আমি তাকে দেয়া কথা রেখেছি। কিন্তু তিনি হয়তো আমার সন্দেহের এই বিজ্ঞ আইনজীবীদের প্রভাব ও পরামর্শ এড়াতে পারেননি।

এরপর ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় বেরিয়েছে। তা নিয়ে দেশে হৈচৈ হয়েছে। আমার অত বড় রায় পড়ার সময় ছিল না এবং ইচ্ছাও ছিল না। শুধু বুঝেছি, রায়ে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা রক্ষার আগ্রহ দেখানো হয়েছে। প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে মিডিয়ায় এক সময় নানা প্রচার-প্রোপাগান্ডা শুরু হয়। আমি তাতে কান দেইনি। মনে করেছি, তার অনেক শত্রু আছে। এটা তাদেরই কাণ্ড। দু’দিন পর এগুলো হাওয়ার মিলিয়ে যাবে।

কিন্তু এরপরই ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায়ের সঙ্গে প্রধান বিচারপতির একটি অবজারভেশন বা পর্যবেক্ষণ প্রকাশিত হয়। এটি পাঠ করে আমি বিস্মিত হই। এটি রায়ের কোনো আইনি বিশ্লেষণ বা পর্যালোচনা নয়। সরকার, মন্ত্রিসভা ও এমপিদের অযোগ্যতা নিয়ে ঢালাও রাজনৈতিক সমালোচনা।

এ ধরনের বিতর্কমূলক রাজনৈতিক বিবৃতিদানের এখতিয়ার উচ্চ আদালতের আছে কিনা আমি জানিনা। সরকারের বা সরকারি কোনো বিভাগের ভুল-ত্রুটি ধরা পড়লে আদালত সেই নির্দিষ্ট বিষয়ে কঠোর সমালোচনা করে থাকেন বলে দেখেছি। কিন্তু গোটা সরকার ও পার্লামেন্টকে এমনভাবে তুলাধুনো করার উদাহরণ আমার জানা নেই।

প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহাকে যেভাবে তার পদ থেক সরতে হয়েছে, তা আমি আগেও সমর্থন করিনি, এখনও করি না। তিনি একজন ভালো মানুষ। কিন্তু দশচক্রে ভগবান ভূত হয়েছেন। আমার ধারণা সঠিক কিনা জানিনা, ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায়ের সঙ্গে যুক্ত পর্যবেক্ষণটি সাবেক প্রধান বিচারপতির লেখা নয় বলেই আমার বিশ্বাস।

পর্যবেক্ষণের বক্তব্য, ভাষা ও আক্রমণের ভঙ্গিতে তথাকথিত সুশীলসমাজ এবং তার বিজ্ঞ ও প্রবীণ আইনজীবীদের প্রভাব লক্ষণীয়। গোটা পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করলে দেশে যে একটি জুডিশিয়াল ক্যু ঘটানোর চেষ্টা হয়েছিল এবং বিচারপতি সিনহাকে তার অজ্ঞাতেই এই ক্যু ঘটানোর শিখণ্ডি হিসেবে ব্যবহার করতে চাওয়া হয়েছিল, তাতে সন্দেহ পোষণের অবকাশ কম।

আমার দুঃখ হয়, ড. কামাল হোসেনদের সংস্রবে এসে, পরামর্শ শুনে দেশের বহু ভালো মানুষ ও সৎ মানুষের সর্বনাশ হয়েছে। তাদের মধ্যে সাবেক রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দীন একজন। দেশের দুর্দিনের সারথি, একজন সৎ ও নিরপেক্ষ রাষ্ট্রপতি হিসেবে তিনি দেশের ইতিহাসে স্মরণীয় ব্যক্তি হয়ে থাকতে পারতেন।

জেনারেল এরশাদের পতনের পর অস্থায়ীভাবে রাষ্ট্রপতির পদ গ্রহণ করে তার নীতিপরায়ণতা ও নিরপেক্ষতার জন্য সারা দেশের মানুষের অকুণ্ঠ শ্রদ্ধা অর্জন করেছিলেন তিনি।

কিন্তু ২০০১ সালে আওয়ামী লীগ মনোনীত রাষ্ট্রপতি থাকাকালে সাধারণ নির্বাচনের প্রাক্কালে চারপাশে তার কনসাইন্স কিপার হয়ে এসে জুটলেন ড. কামাল হোসেন, সঙ্গে ডা. বদরুদ্দোজা, মান্নান ভুঁইয়া প্রমুখ। বেগম খালেদা জিয়াও তার সঙ্গে ঘনঘন দেখা-সাক্ষাৎ শুরু করেন। দশচক্রে ভগবান ভূত হলেন। আজ তিনি আগের সুনাম ও জনপ্রিয়তা হারিয়ে বেঁচে থেকেও বেঁচে নেই। বিস্মৃতির অতলে তলিয়ে গেছেন।

ড. ইউনূসের যতই সমালোচনা করি, তিনিও গ্রামীণ ব্যাংকের প্রশ্নে সরকারের সঙ্গে মামলা-মোকদ্দমায় যেতে রাজি ছিলেন না। তাকে রাজি করালেন কে? বাজারে প্রচলিত নামটা আর উল্লেখ করতে চাই না। এই মামলা-মোকদ্দমা চলাকালে আমি ছিলাম ঢাকায়।

ড. ইউনূসের অন্যতম আইনজীবী রোকনউদ্দিন মাহমুদ আমাকে জানালেন, নোবেলজয়ী সরকারের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহার করতে চান, সরকার আপস করতে রাজি কিনা তা আমার মাধ্যমে জানতে চান। আমি তখনকার আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিককে জানাই। তিনি বললেন, সরকার ইউনূসের সঙ্গে বিবাদ চায় না। আপস চায়। আগামীকাল আদালতে মামলার তারিখ। ড. ইউনূসের আইনজীবীকে বলুন, কাল আদালতে গিয়ে মামলা প্রত্যাহার করে আমাকে জানাতে। আমি সঙ্গে সঙ্গে আমাদের যা করণীয় তা করব।

ঠিক হল পরদিন সকালে রোকনউদ্দিন মাহমুদ আমাকে তা জানাবেন। আমি আইনমন্ত্রীকে জানাব। কিন্তু আমি বনানীতে আমার হোটেল কক্ষে বসে আছি। সঙ্গে আমার বন্ধু সাবেক সিএসপি মোকাম্মেল হক। সকাল দশটায় আইনমন্ত্রী জানতে চাইলেন, খবর কী? বললাম, এখনও কিছু জানি না।

এর পরপরই রোকনউদ্দিন মাহমুদ জানালেন, মামলা উইথড্র হবে না। ড. ইউনূস মত পাল্টেছেন। কারণ কী? পরে জানলাম, ড. ইউনূসকে তার প্রধান আইনজীবী মামলায় জেতার আশ্বাস দিয়েছেন। প্রধান আইনজীবীর পরামর্শ শুনে তিনি মামলায় জেতেননি। আম এবং ছালা দুই-ই হারিয়েছেন। এখন তিনি উড়ন্ত বিমানে দুরন্ত ব্যবসায়ী।

এই ড. কামাল হোসেন নবগঠিত যুক্তফ্রন্টের কাঁধে সওয়ার হয়েছেন। তিনি আগামী নির্বাচনে জয়ী হয়ে নিজে দেশের প্রেসিডেন্ট বা প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন কি? তার অতীতের ইতিহাস কী বলে? নিজে নির্বাচনে জয়ী হতে পারেন না। চক্রান্তের রাজনীতিতে জড়িত হয়ে বিএনপি-জামায়াতকে ক্ষমতায় যাওয়ার পথ করে দেন। তাতে গণতন্ত্রের সর্বনাশ হয়, মঙ্গল হয় না।

সম্পর্কিত পোস্ট

এসএসসি পরীক্ষার্থীদের শিক্ষা উপকরণ উপহার দিলো ছাত্রদল

banglarmukh official

আইন-বিধি মেনে কাজের গতি বাড়ানোর তাগিদ

banglarmukh official

আছিয়া ধর্ষণ ও হত্যার বিচার ৭ দিনের মধ্যে শুরু হবে: আইন উপদেষ্টা

banglarmukh official

শুক্রবার কক্সবাজার যাচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা ও জাতিসংঘ মহাসচিব

banglarmukh official

শিশু আছিয়ার মৃত্যুতে প্রধান উপদেষ্টার শোক, দ্রুত বিচার নিশ্চিতের নির্দেশ

banglarmukh official

২০২৬ সালেই বাংলাদেশকে এলডিসি থেকে উত্তরণ করা হবে

banglarmukh official