বঙ্গবন্ধু পরিবারের তৃতীয় প্রজন্মের মধ্যে রাজনীতিতে আসা এ তরুণ বাগেরহাট-২ আসনে একাদশ সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে মনোনীত হয়েছেন। সুদর্শন চেহারা, বাচনভঙ্গির কারণে ইতিমধ্যেই সারা দেশে আলোচিত তরুণ হিসেবে নিজের একটা স্বতন্ত্র স্থান করে নিতে সক্ষম হয়েছেন তিনি। আসন্ন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের অন্যতম কনিষ্ঠ প্রার্থী শেখ তন্ময়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছোট ভাই শেখ আবু নাসেরের ছেলে শেখ হেলাল উদ্দীনের একমাত্র ছেলে তিনি।
লন্ডন থেকে পড়াশোনা করে দেশে এসে রাজনীতিতে মনোননিবেশ করা শেখ তন্ময় বলেন, ‘আমার দাদা শেখ আবু নাসের, তিনি বঙ্গবন্ধুর একমাত্র ছোট ভাই ছিলেন। ১৯৭৫ এর ১৫ আগস্ট তিনিও প্রাণ হারান। যদিও তিনি রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন না সেভাবে। পারিবারিকভাবে সবসময় এটাই আমাদের পরিবেশ, এটাই আমাদের ঐহিত্য। আমরা চাই, মানুষের জন্য কাজ করতে।
আজকে যখন দেখি আমাদের প্রধানমন্ত্রী কত বাধা পেরিয়ে, কত ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে আজকে এই পরিবেশটা আমাদের জন্য তৈরি করতে সক্ষম হয়েছেন। মানুষ ভালো বলবে, মন্দ বলবে; কিন্তু তিনি চেষ্টা তো করেছেন। গত ১০ বছরে প্রধানমন্ত্রী যে কাজ করেছেন এটা তো কেউ অস্বীকার করতে পারবে না। আমি সত্যের পক্ষে। আমি জানি, আমি নিজে দেখেছি তার পরিশ্রম। আমরা বঙ্গবন্ধুকে দেখিনি, তবে আমরা জননেত্রী শেখ হাসিনাকে দেখেছি। প্রধানমন্ত্রীকে দেখে ইন্সপায়ার্ড হয়েছি। তিনি সকাল থেকে রাত পর্যন্ত কাজ করছেন। কিন্তু তার একার পক্ষে তো সব সম্ভব নয়; আমি চেষ্টা করব তার উন্নয়ন অভিযাত্রায় কিছুটা অবদান রাখতে। আমি মনে করি, এটাই আমার স্বপ্ন, আমি আসলে কাজ করতে চাই।
দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার পর কেমন লাগছে জানতে চাইলে তন্ময় বলেন, ‘আসলে ভাষায় প্রকাশ করতে পারব না; কতটা আনন্দিত আমি। ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে স্বাধীনতার আন্দোলন, বাংলাদেশের সৃষ্টির আন্দোলনে যে দলটি নেতৃত্ব দিয়েছে সেই দল থেকে মনোননয়ন; আমাদের নেত্রীর স্বাক্ষরিত কাগজটি আমার জীবনে অনেক বড় পাওয়া।’
তরুণ প্রজন্মের একজন হিসেবে রাজনৈতিক ভাবনার বিষয়ে তন্ময় বলেন, ‘আমি ঠিক ‘ইয়ুথ আইকন’ তা বলব না; তবে আমি তরুণ প্রজন্মের একজন প্রতিনিধি অবশ্যই।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তরুণদের প্রতি যে ভালোবাসা, তরুণদের প্রতি যে উদ্যোগ তিনি নিয়েছেন, তাতে মনে হয় আমাদের জন্য একটা সুন্দর ভবিষ্যৎ গড়াই প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্ন। আমাদের তথ্যপ্রযুক্তিখাত বলেন, অবকাঠামোখাত যেকোনো উন্নয়ন আমরাই তো ভোগ করব। আমাদের বাবা-মা, তারাতো একটা পর্যায়ে পৌঁছে গেছেন, সবকিছুই তো আমাদের জন্য। তরুণ প্রজন্মের একজন প্রতিনিধি হিসেবে প্রধানমন্ত্রী আমাকে মনোনয়ন দিয়েছেন, আমাকে ওখান থেকে জিতে আসতে হবে।
প্রায় ৩০-৪০ হাজার নতুন ভোটার আছে বাগেরহাটে, তাদের প্রতিনিধি হয়ে আমি চাই যে, আমার দরজা সবার জন্য খোলা। আমার তরুণ ভাইবোনদের জন্য। আমি মনে করি, আমরা তরুণরা একটা পরিবারের মতো। আমরা একসাথে অনেকদূর এগিয়ে যেতে পারব। কিন্তু আমি একা এগিয়ে যেতে চাইলে মনে হয় খুব বেশিদূর এগুতে পারব না।
সংসদ সদস্য নির্বাচিত হলে মানুষের জন্য কী করবেন জানতে চাইলে শেখ তন্ময় বলেন, ‘আমি অবশ্যই চেষ্টা করব, আমাদের বাগেরহাটে যত ভোটার আছে, দলমত নির্বিশেষে প্রত্যেক ভোটারের কাছে গিয়ে আমাদের যে উন্নয়নমূলক কাজ হয়েছে বাংলাদেশে সেটা তুলে ধরব। বলব, আমরা উন্নয়নের মহাসড়কে আছি। কিন্তু আমি মনে করি আমাদের আরও বহুদূর যেতে হবে। কিন্তু কার নেতৃত্বে গেলে আমরা সমৃদ্ধ বাংলাদেশ পাবো এটা জনগন আজ বুঝে গেছে।
বাগেরহাটকে নিয়ে আমাদের যে পরিকল্পনা আছে, গোটা দক্ষিণাঞ্চলকে নিয়ে নেত্রীর যে পরিকল্পনা আছে সেটা তুলে ধরার চেষ্টা করব। আসলে দক্ষিণ অঞ্চলের মানুষ কিছুটা অবহেলিত। বিগত কিছু বছর আগে আমাদের একজন বড় রাজনৈতিক দলের প্রধানও সেখানে একবার নির্বাচিত হয়েছিলেন, কিন্তু সেরকম কোনো উন্নয়নমূলক কাজ আমরা পাইনি। আমাদের মোংলা বন্দরটা বন্ধ ছিল। শুধু তাই নয় আমরা রাস্তাঘাট, অবকাঠামো বুঝে পাইনি।
রাজনীতির মাঠে অল্পদিনে এত আলোচিত হওয়ার বিষয়টিকে কিভাবে দেখছেন জানতে চাইল তন্ময় বলেন, ‘আমি ধন্যবাদ জানাতে চাই, যারা আমাকে আালোচনায় এনেছে। সাধারণ মানুষ, ভাই-ব্রাদার, বন্ধু-বান্ধব যারাই আছেন তারা আমাকে আলোচনায় এনেছে। কিন্তু আমার রাজনীতিতে আসা সেখান থেকে না। আমি মনে করি, আমরা যারা নতুন, তাদের শেখার অনেক বাকি আছে এখনো। আমরা অনেক কিছুই জানি না, আমাদের মুরুব্বিরা আছে। সে শেখাটা এখন আমরা রাজনীতিতে ঢুকে শিখব আনুষ্ঠানিকভাবে, না তার বাইরে থেকে শিখবো? এমনটা অনেকেই ভাবেন। আমার বক্তব্য হচ্ছে, রাজনীতিতে ঢুকে শিখতে হবে সেটা। রাজনীতির এই চর্চাটা আমার জন্মের পর থেকেই আমি দেখেছি।