কয়েকদিন আগেই আমেরিকাকে ‘বিকল্প পথ’ খুঁজে নেওয়ার হুমকি দিয়েছিলেন উত্তর কোরিয়ার সর্বাধিনায়ক কিম জং উন। তারপরই সোমবার নিজস্ব ট্রেনে চেপে চীনে পৌঁছান তিনি। ওয়াশিংটনের উদ্বেগ বাড়িয়ে বেইজিংয়ের সঙ্গে সম্পর্ক আরও মজবুত করতেই এই পদক্ষেপ নিয়েছেন কিম।
উত্তর কোরিয়ার সরকারি সংবাদমাধ্যম কেসিএনএ জানিয়েছে, স্ত্রী রি সোল্ জু ও সেনার শীর্ষ আধিকারিকদের সঙ্গে সোমবার ট্রেনে চেপে রওনা দেন কিম। চীনের সরকার নিয়ন্ত্রিত সংবাদমাধ্যম জিনহুয়া সূত্রে খবর, কিমকে স্বাগত জানাতে রেল স্টেশনে মজুত ছিলেন সরকার ও লালফৌজের শীর্ষ কর্মকর্তারা।
প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত চীনে থাকবেন কিম। আর্থিক নিষেধাজ্ঞা-সহ একাধিক বিষয়ে আলোচনা হবে দুই কমিউনিস্ট দেশের রাষ্ট্রপ্রধানদের মধ্যে। এনিয়ে চতুর্থবার চীন সফরে এসেছেন কিম। এর আগে পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণ নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুনের সঙ্গেও আলোচনা সেরেছেন কিম।
তবে, তাঁর এবারের সফর বিশেষ তাত্পর্য বহন করছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, আন্তর্জাতিক আর্থিক নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার জন্য আমেরিকার উপর চাপ বাড়াতে চাইছেন কিম। এছাড়াও ১৯৫০ থেকে চলে আসা দুই কোরিয়ার মধ্যে যুদ্ধের আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি ঘোষণাও চাইছেন তিনি। তাই চীনের সঙ্গে সম্পর্ক আরও মজবুত করছেন কিম।
উল্লেখ্য, সদ্য আমেরিকাকে প্রচ্ছন্ন হুমকি দিয়েছেন কিম। পরমাণু নিরস্ত্রীকরণে রাজি হওয়া সত্ত্বেও আমেরিকা উত্তর কোরিয়ার উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তোলেনি। এরকম চলতে থাকলে ‘অন্য পথ’ বেছে নিতে বাধ্য হবেন বলে জানিয়েছিলেন উত্তর কোরিয়ার সর্বাধিনায়ক। রাজনৈতিক মহলের মতে, ২০১৯ সালের মধ্যে আমেরিকা নিষেধাজ্ঞা না তুললে ফের পরমাণু অস্ত্র পরীক্ষা শুরু করতে পারে কিম প্রশাসন।
মার্কিন প্রশাসনের পর্যন্ত এখনও পর্যন্ত এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করা হয়নি। এ বছর ফেব্রুয়ারি মাসে ট্রাম্প ও কিমের মধ্যে দ্বিতীয়বার বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তা নিয়েও এখনও পর্যন্ত কিছু জানা যায়নি। তবে আমেরিকা নিষেধাজ্ঞা না তুললে কিমের সঙ্গে আমেরিকার চলতে থাকা মতবিরোধ থেকে ফের সংঘাতের সূত্রপাত হয়ে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
অপরদিকে খুব সম্প্রতি নিজ দেশের সেনাবাহিনীকে আমেরিকার বিরুদ্ধে যুদ্ধপ্রস্তুতি নিতে বলেছিলেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। এরই মাঝে হঠাৎ কিমের চীন সফর যেন যুদ্ধের দামামাকে আরো বেশী করে উস্কে দিলো।