স্টাফ রিপোর্টার// শাওন অরন্য:
ত্যাগ, সাধনা, সংযম ও আত্মশুদ্ধির মিশ্রণ হল সিয়াম সাধনার মাস পবিত্র মাহে রমজান। ইসলাম শুধু মাত্র একটি ধর্মই নয় । এটি একটি পরিপূর্ণ শাশ্বত জীবন বিধান। ইসলামের পাঁচটি মূলভিতিত্তির তৃতীয় ভিত্তি সাওম বা রোজা। এই একটা মাস আমাদের কাছে ছোটখাটো উৎসব এর মতোই যায়। পরিবার,পরিজন,আত্নীয়,বন্ধু-বান্ধব সবাইকে নিয়ে নতুন নতুন ইফতারি আইটেম ট্রাই করা থেকে শুরু করে কার কোন জামা কাপড় পছন্দ, কাকে কিসে ভালো লাগবে তা করতে করতেই কেটে যায়।
কিন্তু “রমজান” সবার জন্য আনন্দ বয়ে আনে না,এমন অনেক মানুষ আমাদের পাশে রয়েছে যারা এই আনন্দের ভাগ থেকে বঞ্চিত। তাই এদের সাথে আনন্দ ভাগ করার এই ইচ্ছা কে সাথে নিয়েই ভিবিডি বরিশাল জেলা বিগত ২ বছরের ধারাবাহিকতায় এবারও আয়োজন করেছে “সাম্যতার ইফতার-সিজন ৩”। এই আয়োজনে অংশগ্রহণ করার মাধ্যমে টিম ভিবিডি বরিশাল সবাই মিলে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ভাই/বোন ও বৃদ্ধাশ্রমের আশ্রিতদের সাথে মিলে একটা দিন ইফতার করে, একটা দিন তাদের পরিবারের মতো ভালোবাসা দেয় তারা।
এই আয়োজনটি আজ ১৭ই মে (শুক্রবার) বরিশাল আমতলার “সরকারি দৃষ্টি প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়” এ করা হয়। বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক, মোঃআসাদ বলেন, “আপনাদের মত যখন কেউ এদের নিয়ে কোন আয়োজন করেন তখন একটু হলেও এরা পরিবারের বিয়োগ ব্যথা ভুলে যায়। আর যখন এরা ভালো থাকে, আনন্দে থাকে আমাদেরও ভালো লাগে”। এ প্রসঙ্গে ভিবিডি বরিশাল জেলার সভাপতি মোঃ সৌরভ তালুকদার বলেন, “ভিবিডি বরিশাল এ নিয়ে পর পর তিন বছর প্রজেক্ট সাম্যতার ইফতারের আয়োজন করে আসছে। পরিবার-পরিজন, বন্ধু-বান্ধব নিয়ে যতই নামী দামি আইটেম দিয়ে ইফতার করি না কেন এদের সাথে ইফতার করার যে আত্মতৃপ্তি তা অন্যকিছুতে মেলে না। এদের খুশিমুখগুলোই বলে দেয় এরা ঠিক কতটা আনন্দিত। সকলের সহযোগিতা পেলে চেষ্টা করব সামনের দিনগুলোতেও যেন আমরা এ ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে পারি”।
সাধারন সম্পাদক (ভিবিডি-বরিশাল) আবু নাঈম বলেন”এ ধরনের প্রজেক্টগুলো আমাদের কাজ করার অনুপ্রেরণা দেয়। আমরা যারা পরিবারের সাথে আছি তারা হয়তো বুঝিই না পরিবার বিহীন জীবন কেমন হতে পারে। একদিনের জন্য হলেও এদের পরিবার হওয়া আমার কাছে সৌভাগ্যের”। ভিবিডি বরিশালের সাবেক সভাপতি মোঃ হাসান মাহমুদ কামরান বলেন, “আমাদের এই ইফতারের উদ্দেশ্য বৃদ্ধা এবং অন্ধ বাচ্চাদের মুখে একটু হাসি ফোটানো যাদের নিয়ে আপন করে ভাবার হয়তো কেউ নেই, আমাদের এই ছোট প্রচেষ্টার মাধ্যমে যদি একদিন ওদের আনন্দের কারন হতে পারি সেটাই আমাদের সফলতা।
যদি সমাজের বিত্তশালীরা এগিয়ে আসে তাহলে ওরা ওদের এই অবস্থা থেকে ঘুরে দাঁড়াতে পারবে”। ইফতার অনুষ্ঠান টি প্রায় ২০০ জন ভলান্টিয়ার, দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিশু ও বৃদ্ধাশ্রমে আশ্রিত বয়স্ক মানুষদের নিয়ে সম্পন্ন করা হয়। বিকেল ৫ টায় ভলান্টিয়াররা ভেন্যুতে এসে তাদের ইফতার পূর্ব প্রস্তুতি সম্পন্ন করে এবং সন্ধ্যা ৭:৩০ মিনিটে সুষ্ঠু ভাবে প্রোগ্রামটির ইতি টানা হয়।