মাদরাসাছাত্রীকে গণধর্ষণের পর হত্যার ঘটনায় ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে বিপরীতধর্মী তথ্য দেয়ায় পটুয়াখালীর সিভিল সার্জন ডা. শাহ মো. মোজাহিদুল ইসলাম ও মেডিকেল অফিসার রেজাউর রহমানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালককে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
একইসঙ্গে তাদের বিরুদ্ধে আসা অভিযোগ অনুসন্ধান করে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল ইউসুফ মাহমুদ মোরশেদ আদালতের আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
ধর্ষণের পর হত্যা মামলার ডেথ সার্টিফিকেটে অসঙ্গতি থাকায় গত ৭ মে এর কারণ ব্যাখ্যা করতে ওই জেলার সিভিল সার্জনকে তলব করে আদেশ দেন হাইকোর্ট। আজ বুধবার নির্ধারিত দিনে তিনি উপস্থিত হয়ে এর ব্যাখ্যা দেন। সিভিল সার্জনের দেয়া ব্যাখ্যা যথাযথ না হওয়াই হাইকোর্টের বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
তলব আদেশে আদালতে হাজির হয়ে নিঃশর্ত ক্ষমা চান ওই সিভিল সার্জন। আদালত ক্ষমা না করে চিকিৎসককে বলেন, এভাবে যদি ময়নাতদন্ত রিপোর্ট দেন তাহলে জাতির কাছে কী বার্তা যায়? এভাবে রিপোর্ট দেয়ার কারণে একটা মামলার বিচার প্রভাবিত হয়, এমনকি রায় ভিন্ন হয়। যেখানে বাদি ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত হয়। পরে আদালত ক্ষমার আবেদন নাকচ করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন আদালত।
উল্লেখ্য, গত বছরের ২৪ অক্টোবর পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী হামিদিয়া মহিলা দাখিল মাদরাসার সপ্তম শ্রেণীর এক ছাত্রীকে নিজ বাড়িতে গণধর্ষণের পর হত্যা করা হয়। ঘটনার তিন মাস পর গত ৩ জানুয়ারি পটুয়াখালীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে একটি নালিশি অভিযোগ করা হয়। ওই ছাত্রীর মা বাদী হয়ে ৮ জনের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ করেন। প্রথমে থানায় মামলা করতে গেলে থানা পুলিশ মামলা গ্রহণ করেনি। এ মামলার আসামি দানেশ চৌকিদার হাইকোর্টে জামিন চেয়ে আবেদন করেন। ওই জামিন আবেদনে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করে আসামিপক্ষ।
সেখানে ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক ডা. রেজাউর রহমান প্রতিবেদনে লেখেন, মেয়েটির গলায় দাগ রয়েছে। শ্বাসরোধে মৃত্যু হয়েছে তার। তবে এটা দুর্ঘটনাজনিত কারণে হতে পারে। এই প্রতিবেদনের সঙ্গে একমত পোষণ করেন সিভিল সার্জন।
আদালত বলেন, যেখানে মেয়েটির মা ধর্ষণের পর হত্যা করার অভিযোগে মামলা করেছে, সেখানে চিকিত্সক ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে কীভাবে অসঙ্গতিপূর্ণ মন্তব্য করেন?