বরিশালের কাঁচামালকে শিল্পের রূপ দেয়ার উদ্দেশ্যেই ষাটের দশকে সৃষ্টি হয় বিসিক শিল্প নগরীর। তবে উন্নত যন্ত্রপাতি ও সঠিক ব্যবহারের অভাব ও দূর্নীতিগ্রস্থ উদ্যোক্তাদের কারনেই আস্তে আস্তে ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে শিল্প।
১৯৬০ সালে ১৩০ একর জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত বরিশাল বিসিক শিল্প নগরীতে বর্তমানে প্লট রয়েছে ৪৭০ টি। যার মধ্যে অর্ধেকের বেশি প্লটই রয়েছে অসাধু মালিকদের হাতে। নাম মাত্র দামে প্লট ক্রয় করে তাতে কোন ধরনের শিল্প প্রতিষ্ঠান না গড়ে বড় বড় গোডাউন ও দোকান তৈরি করে ভাড়া দেয়ার অবৈধ ব্যবসায় লিপ্ত এ সমস্ত প্লট মালিকরা। কোন রকম যাচাই বাছাই ছাড়াই বড় বড় কর্তা ব্যাক্তিদের হাত করেই প্লট হাতিয়ে নিচ্ছে এ সকল অসাধু ব্যাক্তিরা।
সরজমিনে গিয়ে জানা গেছে- সঞ্জয় ঘোস নামের একজন প্লট মালিক কাগজ শিল্প তৈরির জন্য প্লট বরাদ্দ নিয়ে সেখানে ট্রান্সকম বেভারেজ লিমিটেডের পেপসি, সেভেন আপ, মিরিন্ডার বিশাল গোডাউন তৈরি করে সেখানে মাস প্রতি বড় অঙ্কের টাকা ভাড়া নিচ্ছেন। এর পাশেই লোহা শিল্পের জন্য বরাদ্দকৃত প্লটে গড়ে উঠেছে অলিম্পিক বাংলাদেশ বিস্কুট লিমিটেডের বিশাল গোডাউন। বিসিকের পুকুরের উত্তর পার সংলগ্ন শাওন পিভিসি পাইপ মিলের মালিক সিদ্দিকুর রহমান পাইপ মিল তৈরি না করে সেজান জুসের গোডাউন হিসাবে ভাড়া দিয়েছেন।
আরো জানা গেছে- তার বরাদ্দকৃত প্লটের সংখ্যা ৬ টি যার মধ্যে একটি জুসের গোডাউন আর বাকি গুলোতে টাইগার ও টিস্যু কারখানার গোডাউন হিসাবে ভাড়া দেয়া। এছাড়াও এই সিদ্দিকের টেক্সটাইল মিল সংলগ্ন প্লটে চা, সিগারেটের দোকান হিসাবে ভাড়া দিয়ে লাখ লাখ টাকা ব্যবসা করছেন যা বিসিক শিল্প নগরীর আইনের পরিপন্থী ও বিসিক শিল্পের উদ্দোক্তা ধ্বংসের প্রধান কারন।
এর পূর্বেও এ ব্যাপারে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় লেখালিখি হলেও তেমন কোন ব্যবস্থা গ্রহন করেননি বিসিক কর্তৃপক্ষ।
এ ব্যাপারে বিসিক শিল্প কর্মকর্তা খাইরূল বাশার জানান- জেলা প্রশাসক স্যার আমাদের সভাপতি। আমি তাকে বিষয়টি জানিয়েছি। তিনি যে আদেশ দিবেন আমরা সেই ব্যবস্থাই গ্রহণ করব। আমরা এর মধ্যেই সকলকে নোটিশ প্রদান করেছি।
১৮ ই মার্চ শিল্প সচিব বিসিক নগরীতে পরিদর্শন শেষে গোডাউন ভাড়া দেয়া অসাধু মালিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ নিতে আদেশ করলেও এব্যাপারে উদাসিন বিসিক কর্মকর্তারা।
বরিশাল বিসিক শিল্প নগরীকে একটি আদর্শ শিল্প নগরীর রূপ দেয়ার জন্য এসকল অবৈধ প্লট ব্যবসায়ী ও গোডাউন ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে তাত্ক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি জানিয়েছেন সাধারন ব্যবসায়ীবৃন্দ।