বরিশাল নগরীতে ট্রাফিক পুলিশের অবৈধ কার্যক্রমের ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে জনমনে। শুধুমাত্র মোটরসাইকেলের বিরুদ্ধে অভিযান করেই ক্ষ্যান্ত থাকেন বিএমপি’র ট্রাফিক বিভাগের কর্মকর্তারা। তবে ফিটনেস বিহীন যানবাহন থেকে শুরু করে অতিরিক্ত যাত্রী বহন করা থ্রি হুইলারগুলোর বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ সাধারণ মানুষের।খবর দৈনিক যুগান্তরের।
তাদের দাবী, নগরীতে চলাচল করা থ্রি হুইলার যান থেকে টোকেন বানিজ্য করেই মাসে লক্ষ লক্ষ টাকা চাঁদা পকেটে আসে ট্রাফিক পুলিশের হর্তাকর্তাদের। কথিত রয়েছে এই টাকা বিএমপি’র শীর্ষ কর্মকর্তাদের পকেটেও গিয়ে থাকে। তবে মোটরসাইকেল চালকদের কাছ থেকে তেমন সুবিধা না পাওয়ায় কাগজপত্র ও ড্রাইভিং লাইসেন্স সহ সব কিছু ঠিকঠাক থাকলেও মামলা অথবা উৎকোচের খড়গ নামে মোটরসাইকেল চালকদের ঘারে। এই নিয়ে অনেক স্থানে একাধিকবার ঝামেলা হলেও বিষয়টি বিএমপি পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তারা ততটা গুরুত্ব দিচ্ছে না বলে দাবী একাধিক ভুক্তভোগীর। আর এই ধরণের অবস্থা চলতে থাকলে পরিস্থিতি আরো ঘোলাটে অবস্থা ধারণ করবে বলেও জানান তারা।
শফিকুল মাতুব্বর নামে নগরীর হাতেম আলী কলেজ চৌমাথা এলাকার বাসিন্দা জানান, চলতি মাসেই চৌমাথা এলাকায় এক মোটরসাইকেল চালকের সাথে ট্রাফিক পুলিশের সাথে বাকবিতন্ডা বাঁধে। পরে স্পটে গিয়ে গিয়ে জানতে পারি ট্রাফিক পুলিশের ওই সার্জেন্ট মোটরসাইকেল চালকের কাছে কাগজপত্র দেখতে চায়। এরপর মোটরসাইকেল চালক কাগজপত্র দেখালেও ওই ট্রাফিক সার্জেন্ট তার কাছে ২ হাজার টাকা উৎকোচ দাবী করে। তবে মোটরসাইকেল চালক তা দিতে অস্বীকৃতি জানালে দুই জনের সাথে বাকবিতন্ডা বাঁধে। একপর্যায়ে সাধারণ মানুষ জড় হয়ে গেলে গনপিটুনি খেতে হয় ওই ট্রাফিক সার্জেন্টকে।
নাসির উদ্দিন নামে নগরীর গোরস্থানরোড এলাকার বাসিন্দা জানান, ট্রাফিক পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ নতুন নয়। আমিও ভোগান্তির শিকার হয়েছিলাম। তবে সেই সময় একজন টিআই আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করলেও উপস্থিত মানুষের কারণে সে সফল হতে পারেনি। সব অভিযান মোটরসাইকেলের উপরেই করে ট্রাফিক পুলিশ। অটো মাহিন্দ্রার দিকে তাদের তেমন কোনো নজর নেই। কেননা সেখান থেকে প্রতি মাসে বিট আসে।
বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ কমিশনার (ট্রাফিক) খায়রুল আলম বলেন, ‘বিষয়টি আমি এই প্রথম শুনেছি। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ বা এই বিষয়ে কোনো প্রমান পেলে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার সাহাবুদ্দিন খান বলেন, আমার সিনিয়র অফিসারদের মাধ্যমে খোঁজ খবর নিয়ে এই বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন বরিশাল জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক কাজী এনায়েত হোসেন বলেন, নগরীতে অনেক যানবাহন অবৈধভাবে চলাচল করে। যার অধিকাংশই পুলিশ বিটে চলাচল করছে। এর মধ্যে ব্যাটারী চালিত অটো (হলুদ অটো), গ্যাস চালিত অটো (নীল অটো) ও মাহিন্দ্রা রয়েছে। কিন্তু এসব অবৈধ যানের বিরুদ্ধে অভিযান না চললেও পাড়া মহল্লার মোড়ে মোড়ে মোটরসাইকেলের বিরুদ্ধে অভিযান চলছে। এর কারণ হচ্ছে মোটরসাইকেল চালকদের কোনো ইউনিটি নেই যে তারা আন্দোলন করবে। তাই ব্যক্তি পর্যায়ে চাপ দিয়ে আর্থিক সুবিধা নিতে পারে ট্রাফিক পুলিশ।