ভারতের সাবেক অর্থমন্ত্রী ও কংগ্রেস নেতা ডঃ মনমোহন সিং তার দেশের অর্থনীতির অবস্থা গভীর উদ্বেগজনক অভিহিত করে বলেছেন, মোদি সরকারের সার্বিক চূড়ান্ত অব্যবস্থাপনা’ই এধরনের মন্দার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। মনমোহন সিং এমন এক সময় এধরনের মন্তব্য করলেন যখন বিজেপি সরকারের তথ্য বলছে গত ৩০ জুন পর্যন্ত শেষ ছয় বছরেরও বেশি সময় ধরে ভারতের অর্থনীতি ধীরতম গতিতে প্রসারিত হয়েছে। এই তথ্য প্রকাশ্যে আসার পরেই প্রবীণ কংগ্রেস নেতা এমন মন্তব্য করেন। ভারতের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি চলতি অর্থবছরের (২০১৯-২০২০) প্রথম প্রান্তিকে ৫ শতাংশে দাঁড়িয়েছে, যা আগের প্রান্তিকে ৫.৮ শতাংশ এবং ২০১৮ সালের ৩০ জুনের শেষ প্রান্তিকে ৮.০ শতাংশ ছিল।
১৯৯১ সালে নরসিংহ রাও সরকারের অর্থমন্ত্রী থাকাকালীন যে অর্থনৈতিক সংস্কারের ঘোষণা করেছিলেন, তার জন্য তিনি মনমোহন সিং সর্বজনস্বীকৃত। একটি ভিডিও বিবৃতিতে মনমোহন বলন, ভারতের এই পথ অব্যাহত রাখার সামর্থ্য নেই। তাই আমি সরকারকে অনুরোধ করছি যে, জনগণের দ্বারা তৈরি এই সঙ্কট থেকে ভারতের অর্থনীতিকে বাঁচানোর জন্য সুবিধাবাদী রাজনীতি বাদ দিয়ে এবং সমস্ত বুদ্ধিমান ও শুভচিন্তার মানুষদের মতামত ও চিন্তাভাবনার মননের কাছে পৌঁছাতে হবে। আরও দ্রুত হারে ভারতের অর্থনীতির গতি বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে তা উল্লেখ করে মনমোহন বলেন, গত জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার পাঁচ শতাংশ, এটাই সংকেত যে আমরা দীর্ঘায়িত মন্দার মধ্যে রয়েছি।
এদিকে একটানা পঞ্চম ত্রৈমাসিকে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কমেছে হু হু করে! ২০১৩ সালের মার্চ কোয়ার্টারের পরে সবচেয়ে ধীর গতিতে নেমে দাঁড়িয়েছিল ৪.৩ শতাংশে। বিস্কুট থেকে গাড়ি বিক্রয়ে মন্দা এবং লাখ লাখ কর্মসংস্থান বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ভারতের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে জর্জরিত করেছে বলে বিশ্লেষকরা বলছেন। এর পাশাপাশি বিনিয়োগের দিকে এগিয়ে যাওয়া এবং বৃদ্ধি পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে সরকার গত কয়েকদিনে চারটি খাতে এফডিআই বা বিদেশি প্রত্যক্ষ বিনিয়োগের মান সহজ করা এবং বিদেশি বিনিয়োগকারীদের উপর উচ্চতর ট্যাক্স ফিরিয়ে আনাসহ বেশ কয়েকটি পদক্ষেপের ঘোষণা করেছে বাজেটে ঘোষণার অংশ হিসাবে। গত শুক্রবার ভারতের অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ বেশ কয়েকটি বেসরকারি ব্যাঙ্ক একীভূত করে ব্যাঙ্কিং খাতে সংস্কারের ঘোষণা করেন।