বরিশালের উজিরপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শিশির কুমার পালের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) বরিশাল চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে ওসির নির্যাতনের শিকার রাশিদা বেগম (৫২) বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।
রাশিদা বেগম পুলিশের সাবেক এএসআই মরহুম মো. হেলাল মাতুব্বরের স্ত্রী।
আদালতের বিচারক সানা মো. মাহরুফ হোসাইন মামলাটি আমলে নিয়ে পুলিশ সুপারকে তদন্ত শেষে প্রতিবেদন জমা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার অপর অভিযুক্ত হলেন একই থানার কনস্টেবল মো. জাহিদুল ইসলাম।
তিনি মামলার এজাহারে উল্লেখ করেন, অভিযুক্তরা পুলিশ বিভাগে কর্মরত থেকে ক্ষমতার অপব্যবহার করে বিভিন্ন সময় মানুষকে হয়রানি করে আসছেন। গত ১১ সেপ্টেম্বর সকাল ১০টায় ওসি শিশির কুমার পালের নির্দেশে কনস্টেবল জাহিদুল ইসলাম তার ঘরের মালামাল জব্দ করেন।
পরে একই দিন মালামাল ফেরত নেওয়ার জন্য রাশিদাকে থানায় ডাকা হয়। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে তিনি থানা সংলগ্ন বাচ্চুর দোকানে চা পান করতে যান। এসময় কনস্টেবল জাহিদুল সেখানে এসে নাম জিজ্ঞাসা করলে জবাব দিতে বিলম্ব হওয়ায় তাকে গালাগাল করেন। এর প্রতিবাদ করায় জাহিদুল দোকানের দেয়ালের সঙ্গে চেপে ধরে তার দুই গালে ও ঠোঁটে সিগারেটের আগুনের ছ্যাকা দেন।
এ ঘটনায় ওসি শিশির কুমার পালের কাছে বিচার দিতে গেলে তিনি ডিআইজির কাছে যেতে বলেন। এসময় রাশিদা বেগম তাকে বিচার করার জন্য বললে ওসি তার চুলের মুঠি ধরে মারধর করেন। একপর্যায় উঠিয়ে আছাড় দিলে রাশিদা বেগম সেখানে মলত্যাগ করেন।
এসময় রাশিদা বেগমের ছেলে বাবু এসে প্রতিবাদ করলে তাকে থাপ্পড় দেওয়াসহ সাদা কাগজে সই নেওয়া হয়। এছাড়া, রাশিদা বেগমের সঙ্গে থাকা ১৩ হাজার টাকা দামের একটি স্বর্ণের চেইনও নিয়ে যান তারা। এই ঘটনায় মামলা করলে তাদের অবস্থা আরও ভয়াবহ হবে বলে হুমকি দেওয়া হয়।
এদিকে, উজিরপুর থানার ওসি শিশির কুমার পাল এ অভিযোগ অস্বীকার করেন ও মামলার বিষয়ে কিছু জানেন না বলে দাবি করেন।
এর আগে, ওই নারীকে নির্যাতনের ঘটনায় ডিআইজি ও পুলিশ সুপার বরাবর অভিযোগ দেওয়া হয়। এর প্রেক্ষিতে ঘটনার তদন্তে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। পাশাপাশি, অভিযুক্ত কনস্টেবল জাহিদুল ইসলামকে থানা থেকে প্রত্যাহার করে পুলিশলাইন্সে সংযুক্ত করা হয়েছে বলেও জানা গেছে।